ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীতে ষ্পীটবোট দুর্ঘটনায় নিহত প্রতি পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরন দেওয়ার জন্য মানবাধিকার সংস্থা ‘ল এ- লাইফ’ এর পক্ষ থেকে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিষ্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিষ্টার মোহাম্মদ কাওসার পাঠিয়েছেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারী নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা ও ফরিদপুর জেলা প্রশাসক সহ দোহার ও চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর নোটিশ পাঠিয়েছেন। আইনি নোটিশে তিন দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ প্রতি পরিবারকে ১কোটি টাকা করে দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখিত সময় শেষে সোমবার সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিষ্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব যুগান্তরকে জানান, “যেহেতু নির্ধারিত সময়ে মধ্যে ক্ষতিপুরন দেওয়া হয় নাই। তাই পদ্মায় ষ্পীডবোট দুর্ঘটনায় নিহত ৬ পরিবারের ব্যাপারে আগামী রোববার উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করা হবে”।
আইনী নোটিশে বলা হয়েছে, পদ্মা নদীর চর মৈনট ও গোপালপুর ঘাট দুটি নিয়ন্ত্রন করেন দোহার ও চরভদ্রাসন উপজেলা সহ জেলা প্রশাসন। ঘটনার দিন ভোরে ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার মধ্যে লাইফ জেকেট ছাড়াই অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে মৈনট ঘাট থেকে পদ্মা পারাপারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পদ্মা নদীর চরঝাউকান্দা ইউনিয়ন গভীর এলাকায় গিয়ে বিপরীতমুখী দু’টি ষ্পীডবোটের মুখোমুখী সংঘর্ষে ৬ যাত্রী নিহত হয়। তাই ষ্পীডবোটের ওপর সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিয়ন্ত্রন থাকার পরও কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারার কারণে ঝড়ে গেছে ৬টি তাজা প্রাণ। আহত অবস্থায় পঙ্গুত্ব বরণ করেছে অনেকে। নোটিশে বলা হয়েছে প্রশাসন তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যার্থ হয়েছেন। দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা, উদাসীনতার কারণে ৬ জনের প্রাণহানী সহ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেক যাত্রী।
নোটিশে বলা হয়েছে, দেশের সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনগণের জীবনের অধিকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরাসরি লঙ্ঘন করেছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ব্যারিষ্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিষ্টার মোহাম্মদ কাওসার। তাই পদ্মা নদী পারাপারে প্রতিটি যাত্রীকে বীমার আওতায় আনা, ষ্পডিবোট দুর্ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন ও নিহত প্রতি পরিবারে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপুরন দিতে বলেছেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবীরা।
এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপার সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্ট করলেও তিনি মুঠোফোন রিসিপ করেন নাই। পরে ইউএনও কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায় নাই। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ কাউছার বলেন, “ অনভিজ্ঞ লোক দিয়ে ঘাট পরিচালনার দায়ে পদ্মায় ষ্পীডবোট দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং ৬টি তাজা প্রাণ ঝড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, এতোকাল ইজারাদারদের মাধ্যমে ঘাট চালানো হলেও কোনোদিন দুর্ঘটনা ঘটে নাই। কিন্তু এ বছর ঘাট ইজারা বাতিল করে সরাসির প্রশাসন নিয়ন্ত্রন করছেন। এতে আনারী লোক দিয়ে ঘাট পরিচালনা করার ফলে তাদের স্বেচ্ছাচারীতায় ৬টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে এবং একাধিক যাত্রী পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এ দুর্ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার হওয়া দরকার”।