এ কেমন নির্যাতন? পাওনা টাকা চাওয়া এবং চাকুরি ছেড়ে দেয়ার কথা বলায় মাগুরার একটি ইট ভাটার এস্কেভেটর ড্রাইভার রাকিবুল ইসলাম জনি কে নির্মম ভাবে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দিয়েছে ভাটা মালিক।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম যুবক এখন মাগুরা সদর হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। শয্যা পাশে স্ত্রী ও মায়ের আহাজারি কিভাবে চলবে সংসার। নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধ পাবে কি তারা কোনো বিচার?
নির্মম নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার মাগুরা পৌর এলাকার আবালপুর গ্রামের শাপলা ইট ভাটায়।
প্রথমে কিল-ঘুসি পরে বাশ এবং লোহার রড দিয়ে ড্রাইভার জনী কে ভাটা মালিক খলিলুর রহমান এবং তার ছেলে আলামিন নির্দয় ভাবে পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে ভাটায় ফেলে রাখে। পরে শ্রমিকদের সহায়তায় সন্ধ্যায় মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। পরিক্ষা করে দেখা গেছে হাত পায়ের একাধিক হাড় ভেঙ্গে গেছে। প্রায় দুই মাস চিকিৎসাধীন থাকতে হবে তাকে।
সে মাগুরার সদর উপজেলার উথুলি গ্রামের শফি মোল্যার ছেলে।
মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রাকিবুল ইসলাম জনি জানান, তিনি খলিলুর রহমানের ইটভাটায় স্কেবেটার চালকের কাজ করেন। শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে জ্বালানী তেল ফুরিয়ে যাওয়ায় স্কেবেটর বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় তিনি ভাটা ম্যানেজার আলিমের কাছে তেল চাইলে সে ভাটায় রাখা ড্রাম থেকে তেল নিতে বলেন। কিন্তু জনি সেখান থেকে তেল নিতে গেলে ভাটা মালিকের ছেলে আল আমিন তাকে অন্যায় ভাবে গালমন্দ করে। এ ঘটনায় সে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে চাকুরি ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে ভাটা মালিক খলিলুর রহমান ও ছেলে আল আমিন বাঁশের লাঠি নিয়ে তাকে বেধড়ক পিটুনি দেয়।
রাকিবুল ইসলাম জনি বলেন, আমার বাবা শফি উদ্দিন মোল্যা একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। বাড়িতেই পড়ে থাকেন। এ অবস্থায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিই আমি। অথচ অন্যায়ভাবে ভাটা মালিক ও তার ছেলে তাকে পিটিয়ে হাতপা ভেঙ্গে দিয়েছে।
রাকিবুলের স্ত্রী তৃপ্তি খাতুন তার স্বামীর উপর নির্যাতন কারীদের বিচার দাবি করেছেন।
ভাটা মালিক খলিলুর রহমান বলেন, ছেলের সঙ্গে ঝগড়া করে সে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে চলে যাচ্ছিল। এতে আমার ভাটা অচল হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় তাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কথা না শোনায় রাগান্তিত হয়ে ছেলের সাথে সেও তাকে মারধর করে। কিন্তু তার হাত-পা ভেঙ্গে গেছে কিনা জানেন না।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।