বাবুগঞ্জে রাতের আঁধারে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শহীদ মিনার গুঁড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেননি।
ঘটনাটি ঘটেছে বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভূতেরদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। পশ্চিম ভূতেরদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ নুরুজ্জামান পুলু মাস্টার জানিয়েছেন। বিদ্যালয়ের নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের কারণে পূর্বের পাকা শহীদ মিনারটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন শহীদ মিনার নির্মান করা লক্ষে। কিন্তু চলতি একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এর লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অস্থায়ী ভাবে কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনারটি প্রস্তুত করেন। গতকাল রাত বারোটার পর শিক্ষার্থী ও শহীদ মিনার প্রস্তুতির সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু পরে রাতের কোনো একসময় কে বা কাহারা পশ্চিম ভূতেরদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভাষা শহীদদের জন্য অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে দেয়।
মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বিদ্যালয়ে গেলে দেখতে পান কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারটি যথাস্থানে নেই আশপাশে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় শহীদ মিনারের জন্য ব্যবহৃত কিছু কলাগাছ পার্শ্ববর্তী খালে ভাসছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারটি দুর্বৃত্তদের ভেঙে ফেলার বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন পলাশ বলেন, এটি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের অপশক্তির কাজ ঘৃণিত জঘন্যতম কাজ যারা করতে পারে তারা বাংলাভাষা ও শহীদদের প্রতি অমর্যাদা করেছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ ঘৃণিত কাজের সাথে জড়িতদের অতি দ্রুত খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন প্রশাসনের কাছে।
এ বিষয়ে পশ্চিম ভূতেরদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যালয়ের জমি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি পক্ষের সাথে কিছুটা বিরোধ রয়েছে এবং শহীদ মিনার প্রস্তুতির ব্যাপারে কতিপয় শিক্ষার্থীর সাথে একটু ভুল বোঝাবুঝির ঘটনাও ঘটেছে। এদের দ্বারা এ কাজ হতে পারে তার ধারণা। তবে তিনিও ঘৃণিত কাজের সাথে যে বা যারাই জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহাবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন দ্রুত সময় বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।