'ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাঁতি সত্ত্বার জাগরণ রচিত হয়েছে। এই আন্দোলনের পথ ধরেই আমাদের স্বাধীনতা এসেছে। শহিদদের আত্মত্যাগের সার্থক হয়েছে। বাংলা, বাঙালি এবং স্বাধীন বাংলাদেশের ভূখ-ের স্বপ্নের দেখেছি তার সূতিকাগার বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন। আমাদের বাঙালি জাতির জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন।'
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে রংপুর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রংপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রথমে এবং পরবর্তীতে জাতীয় পার্টির হয়ে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে রংপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, 'শুধু ফেব্রুয়ারি মাসে বা একটি দিনে নয় আমাদের জাতীয় জীবনের প্রত্যেকটা স্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন করতে হবে। তাহলে আমাদের দেশ প্রেম জাগ্রত হবে। আমাদের দেশে দিন দিন বিদেশি ভাষার গুরুত্ব বেড়ে যাচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক ভাষা শিখব কিন্তু আমাদের গুরুত্ব থাকতে হবে বাংলা ভাষার প্রতি। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের সঠিক মূল্যায়ন হবে না।'
এদিকে রাত এগারোটার পর থেকে রংপুর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার অভিমুখে নামে মানুষের ঢল। হাতে শ্রদ্ধার ফুল আর কণ্ঠে বাঙালির চেতনার চিরঞ্জীব স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে নগর। ঘড়ির কাটা বারোটাতে পৌঁছানোর আগেই বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয় শহিদ মিনার চত্বর।
রাত বারোটা এক মিনিটে ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শুরু হয় শহিদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা প্রথমে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরেআলম মিনা, জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন, জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলুসহ প্রশাসন, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
একে একে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর পরিষদ, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ছাড়াও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপি, জাসদ, বাসদসহ প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও অঙ্গ সংগঠনগুলো ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়াও শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেছে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগ, জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদ, কমিউনিস্ট পার্টি, প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, টিসিএ রংপুরসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠন।
শ্রদ্ধা জানাতে আসা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ দেশের সর্বস্তরে শুদ্ধ বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রতিটি অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য সরকারকে আরো উদ্যোগী হবার আহ্বান জানান। ##