খুলনার পাইকগাছায় লবণপানি চিংড়িচাষ শুরুতেই সংঘর্ষ হামলা-মামলা শুরু হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের পুকুরে লবণ পানি উত্তোলন করে কৃষি জমি নষ্ট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমাবার গভীর রাতে উপজেলার গড়ইখালী ইউপি'র ফকিরাদ গ্রামের বাসিন্দা সরকারের দেয়া সুফলভোগী আ. সবুর গাজী (গজু), মেপ্তাউল গাজী ও আজমল গাজীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় মান্দার গাজী (৮০), মোসলেম সানা সহ অনেকেই জানান, ফকিরাবাদ মৌজায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ শত বিঘার কৃষি জমি রয়েছে। আমন মৌসুমে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে পানি চাহিদা মেটাতে শিবসা নদী থেকে পাইপ লাইনে মিষ্টি পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু একসময় পাইপ লাইন নষ্ট হলে বর্তমান গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আবদুস ছালাম কেরুর চেষ্টায় সবুর গাজীর বাড়ির কাছ থেকে মিষ্টি পানি সংরক্ষণের জন্য নতুন পাইপ লাইনের বসানো হয়। এদিকে কৃষি জমিতে ধান সহ রবি মৌসুমে তরমুজ, করলা, বিভিন্ন ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় বৃষ্টিপানি বা মিষ্টি পানি সংরক্ষণের জন্য গড়ইখালীতে সরকারি অর্থায়ণে কানাখালীতে ১০টি ও ফকিরাবাদে ১০টি করে পুকুর খনন প্রকল্প গ্রহণ করেন। এ প্রকল্পের আওতায় ফকিরাবাদের সবুর গাজী (গজু), মেপ্তাউল গাজী ও আজমল গাজীর নিজস্ব ১০ শতাংশ্য জমিতে ২০মি. দৈর্ঘ্য ১০ মি. প্রস্ত সহ ৩ মি. গভীরতার পুকুর খনন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. ইয়াসিন আলী খান এফএনএসকে জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আবদুস ছালাম কেরু এফএনএসকে বলেন, কিছু দুষ্টলোক লবণপানি তুলে কৃষি জমির পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। উপজেলার লতা ইউনিয়নে চিংড়ি ঘেরের জমির দখল নিয়ে দু'পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে। ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে দু'পক্ষকে হঠিয়ে দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার পুটিমারি গ্রামের ঘেরমালিক কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার জমি মালিক পক্ষ ও প্রতিপক্ষ লতা ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর খলিফা পক্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা যে কোনো মূহুর্তে অনাকাঙ্খিত ঘটনার আশঙ্কা করছেন। জানাগেছে, ক'দিন পূর্বে সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর খলিফা পাওয়ার নামা বলে রাতের আঁধারে কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার, জমির মালিক নিশিকান্ত, সমরেন্দ্র মন্ডল, পীরআলী গাজী গংদের জমিতে বাঁধ দিয়ে দখলের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় অভিযোগ হলে ১৯ ফেব্রুয়ারী থানায় দু'পক্ষকে থানা ওসি জানান, যেহেতু এ জমি নিয়ে মামলা চলছে, সে কারণে আদালতের সিদ্ধান্ত ছাড়া দু'পক্ষকে স্ব-স্ব অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেন। কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার ও নিশিকান্ত মন্ডল, সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন আলমগীর খলিফার লোকজন গত রাতে আমাদের দখলীয় চিংড়িঘেরে বাঁধ দিয়ে আবারও দখলের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে চেয়ারম্যান কওসার আলী ও জমির মালিকরা একত্র হয়ে তাদের ঘেরে পানি তোলার চেষ্টা করলে আলমগীর খলিফার স্ত্রী সহ অনেকেই বাঁধা দেয়। এ সময় দু'পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। এ সময় আলমগীর খলিফার স্ত্রী অভিযোগ করেন পানি তুলতে বাঁধা দিলে প্রতিপক্ষরা আমাকে লাঞ্ছিত করেন। ওসি মো. জিয়াউর রহমান জিয়া এফএনএসকে বলেন, আদালতের সিদ্ধান্ত ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।