নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা কমপ্লেক্সেএ স্বাস্থ্য সেবা প্রদান বন্ধ রেখে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কর্মস্থলে যোগদানের বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছেন চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেলক্সে ওই ঘটনা ঘটে। এর ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে দুপুর ১২ বারটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত জরুরী ও বর্হিবিভাগে সব ধরণের সেবা প্রদান বন্ধ ছিল। এ সময় অনেক রোগী জরুরী বিভাগসহ বিভিন্ন চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে ও বসে থাকতে দেখা যায়। এ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসাবঞ্চিত রোগী ও তাদের স্বজনরা।
উক্ত ঘটনার ভিডিও ও স্থির চিত্র ছবি সিভল সার্জন নিকট পৌছলে তিনি বিষয়টি জানার পর জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ সেলিমকে। ওই কমিটিকে বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মাসুম ইফতেখার।
স্বাস্থ্য কমপেলক্স সংশ্লিট সূত্র ও সেবা প্রত্যাশী একাধিক রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার ২২ফেব্রুযারি ছিল সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মোঃ মহিবুস ছালাম খাঁন সবুজের সেনবাগে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের এক বছর পূর্তি। এ উপলক্ষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেঐ কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুপুরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি উদযাপন করেন। এ সময় তাঁরা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ফুলের তোড়া উপহার দেন। বাসায় থেকে তৈরী করে আনা হয় মিষ্টি, পিঠা, সিঙ্গারাসহ নানা খাবার-দাবার খান। এ সময় সবাই মিলে কেক কেটে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার যোগদানের বর্ষপূতি উদযাপন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর বারটার দিকে আকস্মিকভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর সকল চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা নিজ নিজ কক্ষের ভেতরে ও বাহিরে রোগীদের রেখে চলে যান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে। তাঁরা দুপুর ১২ টা থেতে দেড়টা র্পযন্ত প্রায় দেড়টা পর্যন্ত সেখানে উৎসব পালন করেন। এ সময় অনেক রোগী দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
কথা হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেএ চিকিৎসা নিতে আসা স্কুল শিক্ষক খাজুরিয়া সর্দারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাখাওয়াত উল্লাহ সঙ্গে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,তিনি জ¦র নিয়ে হাসপাথালে গিয়ে ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার জন্য। সেখানে গিয়ে দেখেন ডাক্তাররা চেম্বার ছেড়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা যোগদান বর্ষপূতি উদযাপন করছেন তিনি চিকিৎসা না নিয়েই ফিরে আসেন।
সেনবাগ পৌরসভার অর্জুনতলা গ্রামের খাদিজা বেগম বলেন, তিনি দুপুর বারটার দিকে জ¦রে আক্রান্ত তাঁর আট বছরের ছেলে মোঃ জহিরকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন ডাক্তার দেখাতে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেন। পরে ডাক্তার না পেয়ে ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে ফিরে যান।
চিকিৎসা-সেবা বন্ধ রেখে যোগদানের বর্ষপূতি পালনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মোঃ মহিবুস ছালাম খাঁন সবুজ বলেন, এক বছর পূর্তি হয়েছে, এ উপলক্ষে সবাই তাঁর কক্ষে এসেছেন। তবে জরুরী বিভাগসহ কোন বিভাগে চিকিৎসা বন্ধ রাখা হয়নি। চিকিৎসকেরা সবাই নিজ নিজ কর্মস্থলে আছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নয়টি সিসি ক্যামরা আছে, সেখানে সব রেকর্ড রয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মাসুম ইফতেখার জনকণ্ঠকে বলেন, চিকিৎসা-সেবা বন্ধ করেখে উৎসব পালন করার খবর তিনি পেয়েছেন। এটি একটি জগন্য ঘটনা। তাই তিনি দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটি কাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করেন। কমিটির প্রতিবেদনের ভিক্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।