দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা জুড়ে চলছে বোরো চারা রোপণের তোড়জোড়। পুরুষ কৃষিশ্রমিকদের সাথে সাথে পাল্লাদিয়ে কাজ করছেন নারী কৃষিশ্রমিকরাও সমান তালে। দিন দিন কৃষিকাজে নারী কৃষিশ্রমিকদের অংশগ্রহণ বাড়লেও মজুরি বৈষ্যমের শিকার হচ্ছেন তারা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পুরো উপজেলা জুড়ে চলছে বোরো ধানের চারা রোপণ কাজ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় কাটছে মাঠেই। সেখানেই খাওয়া-দাওয়া। তবে লক্ষ্যণীয় পুরুষ কৃষাণের চেয়ে বেশি সংখ্যায় রোপণ কাজ করছেন নারী কৃষাণীরা। দৈনিক মজুরিতে রোপণ কাজ করছেন তারা। তবে রয়েছে মজুরি বৈষম্য। পুুরুষ কৃষিশ্রমিকরা দিনমজুরি এলাকা ভেদে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আর নারী কৃষিশ্রমিকরা পাচ্ছেন এলাকা ভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।
উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরে সূর্যপাড়া থেকে জমিতে কাজ করতে আসা পুষ্প মার্ডি, বাহামনি মুর্মু, নির্মলা টুডু ও ইপিপিনা মার্ডি বলেন, কৃষি কাজে নারীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছেন। সকালে উঠে বাড়ী রান্নাবান্না শেষ করে দুপুরে খাবার সঙ্গে বেঁধে নিয়ে সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মাঠে বোরো চারা রোপণ কাজ করছেন তারা। পুরুষ কৃষাণের তুলনায় বেশি কাজ করেও সমান মজুরি পাচ্ছেন না। মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত তারা।
পুরুষ কৃষিশ্রমিক জাবেদ খান বলেন, তিনি সকাল ৮টা থেকে ৫টা পর্যন্ত জমিতে কাজ করছেন। দিনমজুরি পাচ্ছেন ৪৫০ টাকা। নারীরা বাড়ীর সব কাজকর্ম করে জমিতে আসতে আসতে দেরি হওয়ায় গৃহস্থরা তাদেরকে একটু কম মজুরি দিচ্ছেন।
উপজেলার খয়েরবাড়ি ইউনিয়নের মুক্তারপুর ডাঙাপাড়া গ্রামের আবদুল আলিম বাবু বলেন, তিনি এ বছর পৌঁণে দুই বিঘা জমিতে বোরো চারা রোপণ করছেন। পুরুষ কৃষাণের তুলনায় নারী কৃষাণীদের কাজের মান গুণগত ভালো হওয়ায় তিনিসহ এলাকার প্রায় প্রত্যেকেই নারী শ্রমিকদের দিয়েই বোরো চারা রোপণ কাজ করাচ্ছেন। তবে নারীদের বেতন কম কারণ তারা ৯টায় কাজে আসেন আর পুরুষরা সকাল ৮টায় আসায় তাদের বেতন একটু বেশি দেওয়া হয়। তিনি নারীশ্রমিকদের ৩৫০ টাকা আর পুরুষশ্রমিকদের ৪৫০ টাকা দিনমজুরি দিচ্ছেন।
একই এলাকার কৃষক বেলাল উদ্দিন বলেন, স্থানীয় কোন কৃষিশ্রমিক না পাওয়ায় পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকে ৬ জন কৃষিশ্রমিক এনে জমির বোরো চারা রোপণ করতে হচ্ছে। এতে দিনমজুরি ৪৫০ টাকার সাথে সাথে দুপুরের খাবারও দিতে হচ্ছে তাদেরকে।