কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওরে এবারেই প্রথম ব্যাপক পরিমান ভাবে জমিতে ভূট্টা চাষ করা হয়েছে। হাওর অঞ্চলের চাষীরা ভূট্টা চাষের উপর বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখতে বসেছে। নিকলীর ৭টি ইউনিয়নে এবার বুরো ধানের পাশাপাশি হাওরে ভূট্টা চাষ করা হয়েছে। নিকলী কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দুর্গম চরাঞ্চল এবং নদদীর পাড়েরর জমিতে সিংপুর, দামপাড়া, ছাতিরচর এই তিনটি ইউনিয়নেই সবচেয়ে বেশি ভূট্টার আবাদ করেছে কৃষকরা। চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৫ হাজার তিনশত সত্তর হেক্টর জমিতে ১৩ টি জাতের ভূট্টা চাষ করা হয়েছে। এ ছাড়া ও কৃষি অফিসের তত্বাবধানে ২৩টি প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। প্রদর্শনী মাঠের কৃষকদের কে কৃষি অফিস বীজ, সার এবং সাইনবোর্ড সরবরাহ করেছে। নিকলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.এম রুহুল কুদ্দুস ভুঞা জনি জানান আমি এ বছর ১৪ একর জমিতে ভূট্টা আবাদ করেছি। আমার প্রতি একরে ভূট্টা উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা, হালচাষ বাবদ ৩ হাজার টাকা, সার ১৮ হাজার টাকা, শ্রমিক মজুরি ৪ হাজার ৮ শত টাকা, পানি সেচ বাবদ ৫ হাজার টাকা, জমি থেকে ভূট্টা উত্তোলন বাবদ সর্বমোট ৫০ হাজার ৮ শত টাকা খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত গাছ গুলো ভালোই দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে এবং ঝড় বৃষ্টিতে গাছের ক্ষয়-ক্ষতি না হয় তাহলে আশা করছি প্রতি একরে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে।
এ নিয়ে কথা হয়, সিংপুর গ্রামের শান্তি রহমান, দামপাড়া গ্রামের মঞ্জিল মিয়া, ঘোড়াদিঘা গ্রামের রতন মিয়া, গুরই গ্রামের হাশিম মিয়া, রোদারপুড্ডা গ্রামের আলী হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার ভূট্টার ভালো ফলন হবে। এ ব্যাপারে নিকলী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন গত বছরের তুলনায় এবছর ভূট্টার চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে এর কারণ হলো অল্প খরচে অধিক লাভ উৎপাদন খরচের তুলনায় বর্তমানে ভূট্টা অধিক লাভজনক। প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ভূট্টা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় ভূট্টা চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ব করা হচ্ছে। চরাঞ্চলে সাধারনত বেলে ও দোঁআশ মাটির পরিমান বেশি থাকায় এবং রাসায়নিক সার কম লাগার কারণে অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভূট্টা চাষে খরচের পরিমাণ অনেকটাই কম। ফলে বর্তমানে ভূট্টার আবাদ অনেকটাই বেশি হচ্ছে। ভূট্টা বিক্রি করে কৃষকরা বোরো ধান ঘরে তুলে এজন্য কৃষকদের কম দামে ধান বিক্রি করতে হয় না। বোরো ধান ঘরে রেখে দেয় এবং ধানের মূল্য বৃদ্ধি পেলে তারা ধান বিক্রি করে থাকে।