অলিভার স্কিপ ও হ্যারি কেনের গোলে রোববার প্রিমিয়ার লিগে চেলসিকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে টটেনহ্যাম। দলের এই পরাজয়ে চেলসি বস গ্রাহাম পটারের উপর চাপ আরো বাড়লো। একইসাথে চেলসিও ইংলিশ লিগে আরো পিছিয়ে পড়লো।
এদিকে দারুন এই জয়ে টটেনহ্যাম প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের শীর্ষ চার-এ অবস্থান আরো মজবুত করলো। পঞ্চম স্থানে থাকা নিউক্যাসলের থেকে স্পার্সরা পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে গেল, যদিও ম্যাগপাইদের হাতে বাড়তি দুটো ম্যাচ রয়েছে। টানা দ্বিতীয় পরাজয়ে চেলসি ১০ম স্থানেই থাকলো। এর ফলে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার স্বপ্ন অনেকটাই শেষ হয়ে গেছে ব্লুজদের।
এবারের মৌসুমে দুই উইন্ডো মিলিয়ে দলবদলের বাজারো সর্বোচ্চ ৬০০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় করেও সফল হতে পারলোনা চেলসি। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় শেষ ১৫ ম্যাচে পটারের দল মাত্র দুটি ম্যাচে জয়ী হয়েছে। ব্রাইটনের সাবেক বস এ সপ্তাহেই মানসিক অশান্তির বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন। প্রতিনিয়ত ব্যর্থতার দায়ভার কোচের উপর চাপিয়ে চেলসি সমর্থকরা পটারের পরিবারকে উদ্দেশ্য করেও অশোভন মন্তব্য করে চলেছেন। যদিও চেলসির নতুন মালিক পটারের সমর্থনে এখনো নিজের অবস্থানে দৃঢ় আছেন। কিন্তু ধৈর্য্যরে একটা সীমা আছে। কাল টটেনহ্যাম স্টেডিয়ামে মাঠে উপস্থিত হয়ে টড বোহলি ক্লাবের আরো একটি ব্যর্থ গল্পের সাক্ষী হয়েছেন।
শেষ ছয়টি ম্যাচে চেলসি মাত্র একটি গোল করেছে। কালকের ম্যাচেও দ্বিতীয়ার্ধে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফিরে আসার মত কোন পারফরমেন্সই দেখাতে পারেনি। বরং প্রথমার্ধে মেজাজ হারানো চেলসি অনেকটা সৌভাগ্যের জোড়েই ১১ জন নিয়ে বিরতিতে গেছে। এমারসন রয়্যালকে সরাসরি মুখে আঘাত করার অপরাধে হাকিম জিয়েচকে সহকারীর সাথে আলোচনা করে লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন রেফারি স্টুয়ার্ট এ্যাটওয়েল। কিন্তু পরবর্তীতে পিচের সাইডে রাখা মনিটর দেখে এ্যাটওয়েল তার সিদ্ধান্ত বাতিল করে জিয়েচকে প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে শুধুমাত্র হলুদ কার্ড দিয়ে সতর্ক করেন।
বিরতির পর মাত্র ১৯ সেকেন্ডের মধ্যেই পিছিয়ে পড়ে চেলসি। এমারসনের শট রুখে দেন কেপা আরিজাবালাগা। কিন্তু ফিরতি শটে স্কিপ স্প্যানিশ গোলরক্ষককে পরাস্ত করলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক টটেনহ্যাম। ম্যাচ শেষের আট মিনিট আগে সন হেয়াং-মিনের কর্ণার থেকে এরিক ডায়ারের ফ্লিকে ইংলিশ অধিনায়ক ব্যবধান দ্বিগুন করেন। আর এতেই চেলসির বিরুদ্ধে লিগে নয়বারের প্রচেষ্টায় জয় ছিনিয়ে নেয় স্পার্সরা।
পিত্তথলির অস্ত্রোপচারের কারণে কাল আরো একবার ডাগআউটে ছিলেন না টটেনহ্যাম বস এন্টোনিও কন্টে। কিন্তু সহকারী ক্রিস্টিয়ান স্টেলিনির অধীনে স্পার্সরা শতভাগ সাফল্য নিয়েই এগিয়ে চলেছে।
চেলসি বস পটার ম্যাচ শেষে স্বীকার করেছেন এই হারের পর তিনি কোনভাবেই ক্লাব বোর্ডের সমর্থন আর আশা করেন না। পটার বলেন, ‘আমি দায়িত্ব সম্পর্কে জানি। এই ধরনের ফলাফল কোনভাবেই কোন ক্লাবের জন্য যথেষ্ঠ হতে পারেনা। আমি সার্বিক পারফরমেন্সে মোটেই সন্তুষ্ট নই। এই পরাজয়ের পুরো দায়ভার আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি। এই মুহূর্তে যা হচ্ছে তা যদি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না হয় তবে সমর্থকরাও মুখ ফিরিয়ে নিবে। আমার দায়িত্ব হচ্ছে কাজ চালিয়ে নেয়া, দলের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা। খেলোয়াড়রাও মুষড়ে পড়েছে। এটা আমাদের সকলের জন্য কঠিন এক মুহূর্ত।’
টটেনহ্যামের সহকারী কোচ স্টেলিনি বলেছেন, ‘জয়ের লক্ষ্যেই আমরা খেলতে নেমেছিলাম। এটা দারুন একটি ম্যাচ ছিল, প্রতিটি বলের জন্যই আমরা লড়াই করেছি। সমর্থক, ক্লাব এবং অবশ্যই কোচ কন্টের জন্য আমরা খুশী।’