নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ে জমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়ে যাচ্ছে। রেলওয়ের অধিগ্রহনকৃত জমির মধ্যে ইতোমধ্যে ১৫ দশমিক ২১৮৩ একর জমি সিএস, এসএ, আরএস, বিএস জরিপের সময় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ডভুক্ত ও নামজারি হয়ে গেছে। এতে সরকারী ওই জমিগুলো বেদখল হয়ে গেছে। আর এর সাথে স্থানীয় ভুমি অফিস ও রেলের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী সরাসরি জড়িত। বর্তমানে এ উপজেলায় সব মিলিয়ে ৪২৭ একর জমি অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে গেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনার কমপ্লায়েন্স নীরিক্ষা প্রতিবেদনে এ ঘটনা ধরা পড়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর রেলওয়ের শহর নামে পরিচিত। এ শহরে রয়েছে রেলওয়ের ৮০০ একর জমি। এর মধ্যে ১১০ একর জমিতে ১৮৭০ সালে দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা গড়ে তোলা হয়। অবশিষ্ট জমির মধ্যে রয়েছে রেলওয়ে অন্যান্য স্থাপনা ও রেলওয়ে কর্মচারীদের জন্য বসতবাড়ি। আর অব্যহ্নত জমির মধ্যে ৫৫ একর কৃষি, ২১ দশমিক ৩৮ একর জলাশয়, ১ একর বাণিজ্যিক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২৫ দশমিক ২৫ একর জমি পৌরসভার কাছে আছে। আর স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত রেলওয়ের বাদবাকি জমি বেহাত হয়ে গেছে। রেলওয়ের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে প্রায় ৪২৭ একর জমি অবৈধ দখলে রয়েছে। জানা যায়, ফিল্ড কানুনগো ৭ নং কাচারি সৈয়দপুর কার্যালয়ের অধীনে বিমানবন্দর সংলগ্ন নিচু কলোনি নামক স্থানে কলোনি নির্মাণের জন্য ১৯ দশমিক ২৪০০ একর অধিগ্রহণ করা হয়। যা ৩২টি সিএস দাগে রেলওয়ের রেকর্ডভুক্ত। কিন্তু ২০১২ থেকে ২০২২ সালে সেই জমির ১৫ দশমিক ২১৮৩ একর ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। এর ফলে লাইসেন্স ফি বাবদ বার্ষিক ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০০৬-এর নির্দেশনা পরিপালন না করা এবং অধিগ্রহণকৃত সব ভূমির স্বত্ব রেকর্ড সংরক্ষণ না করা, জমির সীমানা চিহ্নিত না করা, কৃষি, মৎস্য, বাণিজ্যিক প্রভৃতি জমির রেকর্ড সংরক্ষণ না করা এবং সব প্রকার জমির হিসাব রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ না করায় রেলের প্রকৃত জমির হিসাব সংরক্ষণে অনিয়ম হয়েছে। রেলওয়ে কারিগরি পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও সৈয়দপুর কারখানা শাখার সভাপতি হবিবর রহমান হাবিব বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেলভূমি সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে এই ভূমি অন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে নামজারি করানো সম্ভব হতো না। ফিল্ড কানুনগো ৭ নং কাচারি সৈয়দপুর কার্যালয়ের কানুনগো জিয়াউল হক বলেন এ বিষয়ে রেলওয়ের পক্ষ থেকে অডিট বিভাগকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় ওই ভূমি রেকর্ড সংশোধনী মামলা করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। সব খতিয়ান সংগ্রহ করে মামলা করা হবে।