নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সিঙ্গেরগাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া অভিভাবক সদস্য নাজমুল ইসলামকে সভাপতি মনোনীত করে নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুইজন অভিভাবক সদস্যসহ ২২২জন অভিভাবক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্রী লিজা আক্তারের প্রকৃত অভিভাবক লাবলু মিয়া। তাকে বাদ দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর ভুয়া জন্মসনদের মাধ্যমে নাজমুল ইসলামকে ভোটার তালিকাভুক্ত করেন। প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনের পরিবর্তে গোপনে সিলেকশনের মাধ্যমে ভুয়া অভিভাবক সদস্য নাজমুলকে সভাপতি করে প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন নেন।
এদিকে মাগুড়া ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া প্রত্যয়নপত্রে লিজা আক্তারের প্রকৃত অভিভাবক লাবলু মিয়া। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে দাখিলকৃত জন্মসনদ অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থীর জন্ম তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১০। কিন্তু বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আবদুল মজিদের মেয়েকে দিয়ে নাজমুল ইসলামের বিয়ে হয় ২৯ আগস্ট ২০১১। তাই বিয়ের আগেই লিজা আক্তারের জন্ম হওয়ায় নাজমুল তার বৈধ অভিভাবক নয়।
ওই দাতা সদস্য ৩বার সভাপতি হওয়ায় বিধি মোতাবেক ৪র্থ বার সভাপতি হতে পারেন না। এজন্য প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে তার জামাতাকে পরিকল্পিতভাবে ভুয়া অভিভাবক সাজিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মানোনীত করেন। গত মাসে বিদ্যালয়ের আয়া, নৈশ্য প্রহরী ও অফিস সহায়ক পদে ৩ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিঙ্গেরগাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, জন্ম সনদ অনুযায়ী লিজা আক্তারের অভিভাবক বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। প্রকৃত অভিভাবক কিনা সেটা জানি না। পরিকল্পিতভাবে কারসাজির বিষয়টি তিনি আংশিক স্বীকার করে জানান, এ বিষয়ে সভাপতির সঙ্গে কথা বলেন।
ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাজমুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি লিজা আক্তারকে তার মেয়ে দাবি করেন। কিন্তু তার বিয়ের প্রায় দেড় বছর আগে শিক্ষার্থী লিজা আক্তারের জন্মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিয়ের কাবিন কি আপনার কাছে আছে। হটসঅ্যাপে পাঠায় দেন, তার পর এ বিষয়ে কথা বলব।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ৫ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফ্টসহ অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে বলেন, আমি এখন ঢাকায় আছি। ফিরে এসে বিষয়টির খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।