কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ১৯৬৪ সালে স্থাপিত হয়েছে। এই উপজেলায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের চিকিৎসার চাহিদার প্রয়োজনে ২০১৮ সালে মাঝ দিকে হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়। জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা সিনথিয়া তাসমিন ১ বছরে এই কমপ্লেক্সটির চিত্র একেভারে আধুনিকায়ন হাসপাতালে রুপান্তরিত করতে চলেছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দেখতে খুব জলমলে ও তকতকে। পরিত্যাক্ত স্থান পরিষ্কার করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুল ও ফলের বাগান দিয়ে। দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও সহকর্মীদের সাথে নিয়মিত আলোচনা সভা, র্যালিসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলো পালন এবং তাদের সঠিক দিক নিদের্শনার মাধ্যমে কমপ্লেক্সের আমল পরিবর্তন করে চলেছেন ডা. সিনথিয়া তাসমিন। এর ফলে আগের চেয়ে অনেক বেশি সেবা পাচ্ছে উপজেলাবাসী। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর সিজারিয়ান অপারেশনে নবজাতকের জন্ম হয় এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর আগে গতবছরে এপ্রিল মাসে দীর্ঘ দিনের অবসান গঠিয়ে এক প্রসূতি মায়ের সিজারিয়ানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো অস্ত্রোপচার কার্যক্রম চালু করা হয়। তার দিক নিদের্শনায় এই অপারেশন করেন, এনেস্ত্রেসিয়া ডা. মাহবুবুর রহমান, সার্জন ডা. কামরুন্নাহার, সার্জন ডা. শহিদ মিয়া, ডা. রাবিয়া আক্তার। তাদের সহযোগিতায় থাকেন ওটি ইনচার্জ মুনতাহিনা, সাবিকুন্নাহার, গোলনাহার বেগম, সালমা আক্তার। সম্প্রতি বিনা মূল্যে নবজাতক কন্যা সন্তানের পিতা টিটু দাস বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সিজার করালে ১৫-২০ হাজার টাকা ব্যায় হতো। যা তাদের পক্ষ্যে সম্ভব ছিলো না। সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে এ সুযোগ পেয়ে তারা খুব খুশি। মঙ্গলবার সরেজমিন গেলে দেখা যায়, এই উপজেলার বিভিন্ন রোগিরা বহির্বিভাগে ৫ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে চিকিৎসকদের নিকট থেকে সেবা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা রোগীদের অনেক গুরুত্ব দিচ্ছেন। করোনা ভাইরাসকালীন সময়েও করোনার নমুনা সংগ্রহ করে অফিসের বাহিরের সময়েও পরীক্ষা করেছেন। বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা সিনথিয়া তাসমিন এই প্রতিবেদককে বলেন, এক বছর পূর্বেও এই হাসপাতালের চিকিৎসক সংকট ছিল। ছিল না আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ইকোমেশিন, ইসিজি মেশিন, অপারেশন থিয়েটার। স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে যন্ত্রপাতি চিকিৎসক, টেকনেশিয়ান নার্সসহ সকল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়। তাদের সহযোগিতায় অল্প দিনের মধ্যে ৫৮ বছরপর অপারেশন থিয়েটার চালু করেন। ডা. সিনথিয়া তাসমিন আরো বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আফজাল হোসেনের সার্বিক সহযোগিতায় এই কমপ্লেক্সের দৃশ্যপট পালটে গেচে। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় এমপির সহযোগিতা না পেলে এর পরিবর্তন করা সম্ভব হতো না। এ ছাড়া গাইনী কনসালট্যান্ট ও মেডিসিন বিভাগের ডা. পদ শূন্য রয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে যানা যায়, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলার দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন ৬শত থেকে ৭শত রোগী প্রতিদিন সেবা নিয়ে থাকেন। কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়াই প্রতিদিন জরুরী বিভাগের ৮০-৯০ জন রোগী সেবা নিচ্ছে। এ ছাড়া ৯০ জন ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্ত চাপের রোগীকে বিনা মূল্যে সেবা প্রদান করা হয় বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ সাইফুল ইসলামের সহযোগিতায় হাসপাতালের সেবার মান বেড়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।