মোটা অংকের টাকা অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে সংস্কারপন্থী এক নেতার নিস্ক্রীয় দলছুট কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠণের অভিযোগ তুলে বরিশাল জেলা উত্তর বিএনপির আহবায়ককে দুইদফায় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন পদবঞ্ছিত নেতাকর্মীরা। ঘটনার দুইদিন পর শুক্রবার রাতে এ খবর বরিশালের মিডিয়াপাড়ায় চাউর হয়। এর আগে বুধবার রাতে ঢাকার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দুই দফায় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহ। পরে সিনিয়র নেতারা তাকে উদ্ধার করে চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক বিএনপি নেতারা জানান, বুধবার দিবাগত রাতে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বরিশাল বিভাগের সাবেক জনপ্রতিনিধিদের সাথে ভার্চুয়ালে বৈঠক করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভা শেষে রাত সাড়ে আটটার দিকে দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। সূত্রমতে, প্রথমদফায় সভাকক্ষের বাহিরে বসে দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহকে ঘিরে ধরেন গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মঞ্জুর হোসেন মিলন, বিএনপি নেতা মিঠু তালুকদার, মোল্লা মাহফুজসহ ১৫/২০ জনে। এ সময় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ঘোষিত কমিটিতে সংস্কারপন্থী জহির উদ্দিন স্বপনের নিস্ক্রীয় কর্মীদের কাছে কত টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি করা হয়েছে জানতে চাইলে দেওয়ান শহীদুল্লাহ ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সাথে তর্কে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে শহীদুল্লাহকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন পদবঞ্চিত ক্ষুব্ধ নেতারা। ওইসময় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা শহীদুল্লাহকে রক্ষায় সভাকক্ষের মধ্যে পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে সভাশেষে রাত সাড়ে আটটার দিকে শহীদুল্লাহ নিজেকে রক্ষায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সাথে রওনা হন। এ সময় পদবঞ্ছিত নেতারা ধাওয়া দিলে তিনি (শহীদুল্লাহ) দ্রুত জয়নুল আবেদীনের গাড়িতে উঠে গুলশানের কার্যালয় ত্যাগ করেন। এ সময় বিএনপির ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা শহীদুল্লাহকে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় শ্লোগান দিতে থাকেন। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-১ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবাহান বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালে বরিশালের সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেছেন। উপস্থিত জনপ্রতিনিধিরা বলেছেন, তাদের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তারা আগামীদিনের আন্দোলনে নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারবেন। তবে অর্থের বিনিময়ে বির্তকিত এক নেতার নিস্ক্রীয় দলছুট কর্মীদের সমন্ময়ে ঘোষিত কমিটি নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে চরম বিরোধ চলছে বলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে। বৈঠকে বরিশাল বিভাগের ১৬৪ জন জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবাহান আরও বলেন, বরিশাল জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহকে বৈঠকের আগে ও পরে দুই দফায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ধরেছিলেন। তাদের (ক্ষুব্ধ নেতাকর্মী) অভিযোগ, মোটা অংকের টাকা অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে সংস্কারপন্থী এক নেতার নিস্ক্রীয় দলছুট কর্মীদের নিয়ে পকেট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে শনিবার সকালে দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার কয়েকজন পদবঞ্চিত নেতা ঘোষিত কমিটি নিয়ে তার সাথে তর্ক করেছেন। তাদের তিনি বলেছেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে সেটা তদন্তে প্রমাণিত হবে। এরবেশি কিছু হয়নি।