ঝালকাঠি শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়ামে চলছে রুপসীবাংলা মেলার নবম দিন শনিবার ঝুকিপূর্ন নাগরদোলা দুর্ঘটনার নারী ও শিশুসহ ৩জন গুরুতর আহত হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের প্রথমে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সনাতন পদ্ধতিতে শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে কোন নিরাপত্তা বলয় ছাড়াই নাগর দোলা চালানোয় এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জ ানিয়েছেন। খোলার মাঠে মেলার আয়োজন করায় চাপা ক্ষোভ রয়েছে ক্রিড়ামেধিদের। জেলা শহরের একমাত্র খেলার মাঠ এটি। তারা দাবী করছেন জেলা প্রশাসন এই মেলার আয়োজন করায় কিছু বলতে পারছেন তারা। তবে মেলা শেষ হওয়ার পরেও মাঠটি খেলার উপযুক্ত করতে অনেক সময় লাগবে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শারমীন আক্তার, লামিয়া মৌ, সিরাজ উদ্দিন, মাইনুল ইসলাম জানান, 'রাত তখন পৌনে ১০টা। মেলার মাঠের পশ্চিম দিকে চলতে থাকা নাগর দোলাটির গতি হটাৎ বেড়ে যায়। আর তখনই ছয়টি বক্সের দুটি বক্স একটির সথে আরেকটি লেগে যায়। এতে প্রায় ৩০ ফুট উপর থেকে ছিটকে মাটিতে পরে গিয়ে রক্তাক্ত আহত হয় তিনজন।'
আহতরা হলো ঝালকাঠি পৌর এলাকার পুরাতন কলাবাগান এলাকার মিন্টু হাওলাদারের পুত্র নাইম হাওলাদার (১৩), সদর উপজেলার নবগ্রাম কালী আন্দার গ্রামের আব্দুস শুক্কুরের স্ত্রী মোসাম্মৎ পুতুল বেগম (৩৫) ও রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালি গ্রামের ইউনুস হাওলাদারের পুত্র মো. ইদ্রিস আলী হাওলাদার (৩৩)।
এদিকে দুর্ঘটনার পর নাগরদোলা ও মেলা কর্তৃপক্ষ কেউই উদ্ধার কাজ বা হাসপাতালে এসে আহতদের চিকিৎসায় কোন সহযোগিতা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তবে আহতদের খোঁজ নিতে রাতেই জেলা প্রশাসক ফারহা গুল নিঝুম এবং সিভিল সার্জন এইচ.এম জহিরুল ইসলাম হাসপাতালে আসেন। তবে মেলার ব্যবস্থাপনা কমিটি বলছে আহতদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের চিকিৎসা খরচ বহন করা হচ্ছে।
তবে বিষয়টি মেলা কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করে প্রত্যক্ষদর্শী অনেকই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। মেলা কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের জন্য সনাতন পদ্ধতির স্যালো ইঞ্জিন দিয়ে দুটি নৌকা এবং কৃষিকাজের পুরাতন ট্রাক্টর মেশিন দিয়ে নাগরদোলা চালানো হচ্ছিলো। টিকিটের বিনিময়ে চালানো এসব নাগরদোলা খুবই ঝুকিপুর্ন বলে তারা অভিযোগ করেছে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের উদ্দোগে ও খুলনার চামেলী ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া পক্ষকাল ব্যাপী মেলাটি আগামী ১০ মার্চ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
মেলার ব্যবস্থাপনায় থাকা চামেলী ট্রেডাস মালিক মো. রাসেল জানান, বরিশাল হাসাপাতালে গিয়ে আহতদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের চিকিৎসা খরচ বহন করা হচ্ছে। নাগর দোলা চলা অবস্থায় একটি সিটে থাকা সবাই বিতন্ডায় জাড়িয়ে পরলে হঠাৎ করেই ইজ্ঞিন থামিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় দু’টি বক্্েরর সাথে ধাক্কা লেগে আ ঘটনা ঘটে।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ঐ সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক নবীন কুন্ডু বলেন, 'তিন জনই গুরুতর। ছোট শিশুটির মুখের চোয়ালের নিচের অংশ ফেটে গিয়ে বেশ রক্তাক্ত জখম হয়েছে। নারীর শরীরে যন্ত্রনা হচ্ছিলো তার পেসার ডাউন হয়ে গেছে আশংকাজন অবস্থা হয়েছে। আর আহত ইদ্রিসের বামপায়ের হাঁটু ও বাম হাতে কব্জি ভেঙ্গে জখম হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার ওসি নাসির সরদার জানায়, ঘটনার পর পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে সহায়তা করেছে। এখোন পর্যন্ত আহতদের পক্ষ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গনমাধ্যাম কর্মীদের কাছে দেয়া এক ক্ষুদে বার্তায় জানান, 'এমন দুর্ঘটনার বিষয়টি অত্যন্ত দুখ:জনক ও অনাকাঙ্খিত। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখবো।'