বড়াইগ্রামে অগ্নিকাণ্ডে ঘুমন্ত দুই সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু

এফএনএস (আপন; বড়াইগ্রাম, নাটোর) : : | প্রকাশ: ৮ মার্চ, ২০২৩, ০৩:০৮ এএম : | আপডেট: ৮ মার্চ, ২০২৩, ০৩:০৯ এএম

বড়াইগ্রামের খাকসা উত্তরপাড়া গ্রামে অগ্নিকাণ্ডে নিজ ঘরে পুড়ে ঘুমন্ত দুই সন্তানসহ মায়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- সুমা বেগম (৩২) ও তার মেয়ে অমিয়া আফরিন মাহী (১০) ও ছেলে ওমর ফারুক (৪)। অগ্নিকাণ্ডে ওই গৃহবধুর স্বামী মোহাম্মদ আলী ওরফে ওলি (৩৮) ও তার বন্ধু আনোয়ার হোসেন (৩৭) দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধ আনোয়ার হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাষ্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া মোহাম্মদ আলীকে নাটোর সদর হাসতাপালে চিকিৎসা শেষে বুধবার সকালে বাড়িতে নেয়া হয়েছে। গৃহকর্তা মোহাম্মদ আলী ন্যাশনাল পরিবহণের বাস চালক। আর মেয়ে অমিয়া খাকসা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী ছিলো। 
বুধবার স্ত্রী সন্তানদের জানাজা শেষে আহত মোহাম্মদ আলী জানান, রাত সোয়া নয়টার দিকে বন্ধু আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে তিনি বাড়িতে এলে সুমা তাদেরকে খাবার দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আকস্মিক ঘরে আগুন ধরে। আগুন দেখে তিনি স্ত্রীর হাত ধরে টেনে বাইরে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু তার স্ত্রী ঘুমিয়ে থাকা দুই সন্তানকে আনতে দৌড়ে ঘরে চলে যান। এ সময় ঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণে তারা কেউই আর বের হতে পারেননি। পরে স্ত্রী-সন্তানকে উদ্ধারে এগিয়ে গিয়ে বন্ধুসহ তিনি দগ্ধ হন। অগ্নিকাণ্ডে ঘরে থাকা একটি মোটর সাইকেল ও ফ্রিজসহ টিনশেড তিনটি কক্ষের যাবতীয় মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 
বড়াইগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মমিন আলী জানান, শবে বরাতের রাত হওয়ায় গ্রামের অধিকাংশ পুরুষেরা মসজিদে ছিলেন। এ কারণে আগুন লাগলেও তাৎক্ষণিক তা নেভাতে না পারায় আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে এমন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। 
বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আকরামুল হাসান জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই তারা তিনজন আগুনে পুড়ে মারা যান। পরে আমরা সেখানে পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নেভাই। 
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব বলেন, পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। খবর পেয়ে নাটোর ও বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভায়। জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ এবং ইউএনও মোসা. মারিয়াম খাতুন রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মৃতদেহ দাফনের জন্য স্বজনদের হাতে নগদ ২০ হাজার টাকা তুলে দেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক ঘর তৈরিসহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।  

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW