জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী রায়েরছড়া বাজার এলাকায় স্বামীর বাড়িতে তানজিনা আক্তার হত্যাকান্ডের শিকার হন। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও স্বজনরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে রায়েরছড়া বাজারে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।
জানা গেছে, সিঁধুলী ইউনিয়নের সদরাবাড়ী গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিনের সাথে ৩ বছর পূর্বে একই ইউনিয়নের চর লোটাবার গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে তানজিনা আক্তারের (১৮) বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তানজিনা আক্তারকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে হেলাল ও তার পরিবার। পরে মেয়ের বাবা তারা মিয়া হেলাল উদ্দিনকে নগদ এক লাখ টাকা ও একটি মোটর সাইকেল কিনে দেন। এর কিছুদিন পর হেলাল বিদেশে যাবে বলে তার শ্বশুরের কাছে আরো টাকা দাবি করেন। এ দফায় তারা মিয়া তাকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দেন। এক বছর পূর্বে হেলাল উদ্দিন সৌদি আরবে চলে যান।
বিদেশ যাওয়ার কিছুদিন পর ফের ২০ হাজার টাকা দাবি করে হেলাল উদ্দিন। তানজিনা আক্তারের বাবা তারা মিয়া টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে হেলাল উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষেপে যান। তানজিনা আক্তারের উপর নির্যাতনের মাত্রা আরে বাড়িয়ে দেন। একপর্যায়ে গত ১ মার্চ বিকেলে তানজিনার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে হেলালের পরিবার।
এ ঘটনায় তানজিনা আক্তারের মা রিক্তা বেগম বাদি হয়ে গত ২ মার্চ মাদারগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে আসামিরা গা-ঢাকা দিয়েছে।
পলাতক আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- মতিউর রহমান, রফিকুল ইসলাম মৃদা, বাদল মিয়া, লাইলী বেগম, কবুরী বেগম ও ফিরোজা বেগম প্রমুখ।
এ ব্যাপারে তানজিনা আক্তারের বাবা তারা মিয়া বলেন, কয়েক দফায় হেলাল ও তার পরিবারকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। তারপরও তার মেয়ের উপর নির্যাতন কমেনি। পাষন্ডরা তার মেয়েকে গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবি করেন।
এ বিষয়ে শ্যামগঞ্জ কালিবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) মাসুদ পারভেজ বলেন, এখনো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসেনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুয়ায়ী পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।