বিদ্যালয়ের ক্লাস চলাকালিন সময় পূর্ব উপসর্গ ছাড়াই হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করে ক্লাশে অজ্ঞান হয়ে পরছে শিক্ষার্থীরা। চলতি সপ্তাহের তিনদিনে হঠাত করে অজ্ঞাত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে কমপক্ষে ২০ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পরেছে। ফলে গত কয়েকদিন থেকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা হ্রাস পেয়েছে। ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রামানন্দেরআঁক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ক্লাস চলাকালীন সময় পূর্ব উপসর্গ ছাড়াই ২০ জন ছাত্রী হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করে ক্লাশের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে পরে। এরমধ্যে প্রথমে গত রোববার আটজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পরে। সোম ও মঙ্গলবার একইভাবে বিভিন্ন শ্রেণির ১২ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়। অসুস্থতার খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উপজেলা হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
নবম শ্রেণির ছাত্রী জ্যোতি হালদারের অভিভাবকরা বলেন, অন্যান্য দিনের মতো স্কুলে গিয়ে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করে শ্রেণি কক্ষেই অজ্ঞান হয়ে পরে জ্যোতি। খবর পেয়ে স্কুল থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে আরও দুইবার জ্যোতি অসুস্থ হয়ে পরে। একই শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি মজুমদারও একইভাবে অজ্ঞান হয়ে অসুস্থ হয়ে পরলে মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
অসংখ্য অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, দিনের পর দিন শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীরা অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পরার ঘটনা উপজেলা প্রশাসন বা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অবগত না করে উল্টো কারো কাছে ঘটনাটি না বলার জন্য নিষেধ করেছেন প্রধানশিক্ষক বরুণ ঘটকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা। ফলে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে অসুস্থ হওয়ার আতঙ্কে অনেক শিক্ষার্থীরাই স্কুলে আসছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. বকতিয়ার আল মামুন বলেন, শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হওয়ার খবর তাকে জানানো হয়নি। তাকে জানানো হলে অবশ্যই তিনি চিকিৎসক টিম পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতেন। বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক বরুন কুমার ঘটক শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হবার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের নিয়ে জরুরি সভার আয়োজন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি এখনও আমাকে জানানো হয়নি। তারপরেও খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।