ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুই বখাটে কলেজ ছাত্র গৃহবধূকে মারপিট ও ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ মার্চ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার নলতা ইউনিয়নের পাইকাড়া গ্রামে। পুলিশের ভয় দেখিয়ে ও ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার আশ্বাসে দুই বখাটের পরিবারের নিকট থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে স্থানীয় একটি চক্র। পরবর্তীতে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন গেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, ৪ মার্চ (শনিবার) রাতে পশ্চিম পাইকাড়া গ্রামে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিল শুনে রাত ১০ টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে এক সন্তানের জননীকে মারপিট করে পার্শ্ববর্তী বাগানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায় পশ্চিম পাইকাড়া গ্রামের আবদুল আলীমের ছেলে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকদ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ ওরফে তৌফিক এবং তার বন্ধু একই গ্রামের (বর্তমানে নলতা মাঘুরালিতে বসবাসকারী) খোকনের ছেলে কলেজ ছাত্র হাসান। বাড়িতে এসে ঘটনাটি মাকে জানানোর পর ওই গৃহবধূর দাদা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল, মিজানসহ একাধিক ব্যক্তিকে জানান। পরবর্তীতে ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল ও মিজানের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একটি দল কথিত বিচারের আয়োজন করে। বিচারে বখাটে ফয়সাল এবং হাসানসহ তার বাবাকে হাজির করে পুলিশের ভয় দেখিয়ে ১ লক্ষ টাকা আদায় করে তারা। কথিত বিচারকরা ভুক্তভোগী গৃহবধূর পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা এবং থানা পুলিশ ও ডিএসবি’র নাম করে ৫০ হাজার টাকা আদায় করে।
এদিকে ধর্ষিতার মা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, আমার মেয়ের শ্বশুরবাড়ি গাজীরহাটে। ওয়াজ মাহফিল শোনার জন্য সে আমাদের বাড়িতে আসে। রাতে মাহফিল শুনে ফেরার পথে ফয়সাল ও হাসান তার মেয়েকে বাগানে নিয়ে মারপিট করে ও ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে আওয়ামী লীগ অফিসে বিচার বসিয়ে ৫০ হাজার টাকা আমাদের নাম করে আদায় করেছে বলে শুনেছি কিন্তু আমাদের কোনো টাকা দেয়নি।
কথিত বিচারক আওয়ামী লীগ নেতা জয়নালের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি। মেয়েটার শরীরে হাত দিয়েছে ও টানাহেচড়া করে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। তার হাত ভেঙে গেছে সে কারণে বিচার বসিয়ে ৫০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে সেই টাকা দেয়া হয়েছে কী না সে ব্যাপারে তিনি কোন উত্তর দেননি। তিনি আরও জানান, নলতা বিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক বুলবুল সাহেবকে জানিয়ে বিচার করা হয়েছে। থানার উপপরিদর্শক বুলবুল ইসলাম এবং ডিএসবি রনির নিকট ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।