আবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৫৬’র আওতায় এ তালিকায় যে সব পণ্যের নাম রয়েছে, তার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কোনো ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার জন্য যদি কোনো কারসাজি করে বা মজুদ রেখে সংকট তৈরি করে। তবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। কিন্তু দীর্ঘ ৬৭ বছরের এ পুরোনো আইনে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সিগারেট কয়লা ও কাঠ এখনো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। সেই সাথে এলাচি, লবঙ্গ,দারুচিনি, তেজপাতার মতো কম ব্যবহৃত পণ্য ও নিত্য পণ্য হিসেবে তালিকায় রয়েছে। ১৯৫৬ সালের মূল আইনে ৪৪ ধরনের নিত্য পণ্যের তালিকা দেওয়া আছে। প্রথম শ্রেণী টিই হচ্ছে ভোজ্যতেল, তৈলবীজসহ খাদ্যদ্রব্য। এ খাদ্য দ্রব্যের মধ্যে ধান,চাল, গম, আটা আছে কি না তা স্পষ্ট করা হয়নি। নিত্য পণ্যের মধ্যে আরও রয়েছে নিউজপ্রিন্টসহ সব ধরনের কাগজ, জ্বালানি তেল,ইস্পাত, প্রাকৃতিক রেশম সুতা, কয়লা, ঔষধ, সাইকেল ও সাইকেলের যন্ত্রাংশ, সিগারেট,চা, চিনি,শেভিং ব্লেড, সেলাই মেশিন, শিশু খাদ্য, স্কুল কলেজের পাঠ্য বই, তুলার সুতা,গ্যাস সহ রাসায়নিক পণ্য,ইলেকট্রিক্যাল পণ্য, গ্লাস, কাঠ, সিমেন্ট, স্যানিটারি ফিটিংস টাইলস, সিনেমার কাঁচা ফিল্ম, রাসায়নিক সার, টাইপ রাইটার ইত্যাদি। অন্যদিকে পানি, চাল,গম, আটা,ধান ডিম, আলু, সাবান, ডিটারজেন্ট পাওডার ও টুতপেষ্ট জনগণ প্রতিদিন কমবেশি ব্যবহার করলেও এগুলোকে নিত্যপন্য হিসেবে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয় নি। পুরনো এ আইটি সংশোধন না করে সরকার ২০১২ সালে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা সংশোধন করে। সে তালিকায় চিনি, লবণ,পেয়াজ,ছোলা,শুকনা মরিচসহ ১৭ রকম পণ্যকে নিত্যপন্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে সিগারেট ,কাঠ নিত্যপন্যের তালিকায় থেকে যায়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক খবরে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নিত্যপন্যের তালিকা সংশোধনের কাজ করছে। এ তালিকায় নতুন কিছু পণ্যের নাম সংযুক্ত করা হবে এবং কিছু পণ্যের নাম বাদ দেয়া হবে। তবে পুরনো এ আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করার কোনো উদ্যোগ নেই। এ তালিকা প্রণয়নের কাজ কমিটি গত এক বছর আগে শুরু করলেও এর কোনো অগ্রগতির খবর নেই। স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর সিগারেট কি করে নিত্য পণ্য হতে পারে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অনেকেই তালিকা থেকে এটা বাদ দেওয়ার পক্ষপাতী। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনেকেই মনে করেন, সিগারেট বাদ দিলে এর উৎপাদন, বিপণন ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের ক্ষমতা কমে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে দুর্বল হলেও ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে ধূমপান নিয়ন্ত্রণ আইন রয়েছে। বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। তাই ভোক্তা বান্ধব করে সাধারণ মানুষ যেসব পণ্য প্রতিদিন ব্যবহার করছেন, তালিকায় সেগুলো রাখা দরকার। এবং যত দ্রুত সম্ভব এ আইন পরিবর্তন, পরিবর্তন করে সময়োপযোগী করা জরুরি। আমরা মনে করি সরকার এ উদ্যোগ খুব দ্রুততম সময়ে গ্রহণ করবেন।