নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ গত তিনদিনে তিন নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে। পুলিশ বলছে, এরা সকলেই পারিবারিক কলহের জের ধরে আত্মহত্যা করেছেন।
সবশেষ সোমবার (১৩ মার্চ) দপুরে উপজেলা সদরের বালুকাপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় রঞ্জনী রানী (৬০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ। তিনি ওই এলাকার মৃত সন্তোষ চন্দ্র মন্ডলের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানান, তার দুই মেয়ের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে। রোববার দিবাগত রাতে তার ছেলে রনজিত চন্দ্র মন্ডল বিয়ে খেতে গেলে মা রঞ্জনী রানী একা বাড়িতে ছিলেন। সকালে অনেক বেলা পর্যন্ত কারো কোন সারা শব্দ না পেয়ে প্রতিবেসীদের সন্দেহ হলে ঘরের জানালা দিয়ে তার মরদেহ গলায় দড়ির রশি দিয়ে ঘরের তীরের সাথে ঝুলতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেয়া হলে মহাদেবপুর থানার এসআই আসাদুল ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সৎকারের অনুমতি দেন।
আগের দিন রোববার (১২ মার্চ) বিকেলে থানা পুলিশ এখান থেকে অর্ধ কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদরের লিচুতলা পূর্বপাড়া মহল্লায় নানা ফজলুর রহমানের বাড়ি থেকে মেরাজুম মনিরা মিম (১৮) নামে এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের মাদিশহর গ্রামের আবদুল মান্নানের মেয়ে এবং উপজেলা সদরের জাহাঙ্গীরপুর সরকারি বালিক উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের দ্বাদশ বর্ষের শিক্ষার্থী। মহাদেবপুর থানার এসআই জাহিদ জানান, সকালে মিম তার মায়ের সাথে নানা বাড়ি বেড়াতে আসেন। সেখানে কাপড় কেনাকাটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুপুরে মিম দোতলার একটি ঘরে গিয়ে দরজা জানালা বন্ধ করে ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে দরজা না খোলায় বাড়ির লোকজনের সন্দেহ হলে তারা দরজা ভেঙ্গে তার মরদেহ ঝুলতে দেখেন। পরে থানা পুলিশে খবর দেয়া হয়।
এছাড়া শুক্রবার (১০ মার্চ) থানা পুলিশ এখান থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে বকাপুর গ্রাম থেকে জিন্নাতুন খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন। তিনি ওইগ্রামের এনামুল হকের স্ত্রী। পারিবারিক কলহের জের ধরে জিন্নাতুন তার শোবার মাটির ঘরের টিনের চালের তীরের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। জানতে পেরে থানার এসআই সামিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন জানান, এসব ব্যাপারে থানায় পৃথক ইউডি মামলা এন্ট্রি করা হয়েছে।