‘হয়তো আর আমার বেঁচে থাকা হবেনা! হবেনা আর পড়ালেখা! আমি বাঁচতে চাই,সুস্থ্য হয়ে আবার কলেজে ফিরে পড়ালেখা করতে চাই। আমার বাবা একজন হতদরিদ্র দিনমজুর তার পক্ষে আমার চিকিৎসার জন্য এত টাকা খরচ করা সম্ভব না। আমি সকলের সহযোগিতা চাই।’ কান্না করে কথা গুলো বলছিল কিডনি রোগে আক্রান্ত পাবনার সাঁথিয়া উপজেলাধীন আতাইকুলা থানার ভূলবাড়িয়া নতুনপাড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিন ও সবিতা খাতুন দম্পতির বড় ছেলে গরীব ও মেধাবী সবুজ আলী(২৪)। সে পাবনা শহীদ এম মনসুর আলী কলেজের মার্কেটিং বিষয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। চিকিৎসকরা বলেছেন তাঁর দুটি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে। চিকিৎসার জন্য প্রায় ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকার প্রয়োজন। শেষ সম্বল বসতভিটার চার শতক জমি ছিল সেটাও চিকিৎসার জন্য বিক্রি করে দিয়েছেন তার বাবা। তাদের আর কোন জায়গাজমি নেই। তার বাবা দিনমজুর হিসেবে সাভারে টাইলসের ফিনিশিং এর কাজ করেন। মা আগে ঢাকা পোশাক কারখানায় (গার্মেন্টসে) শ্রমিকের কাজ করতেন, এখন গৃহিনী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গেল বছর অক্টোবর মাসের শেষ দিকে নিজ বাড়িতে সবুজ হঠাৎ করে ব্রেইন স্ট্রোক করেন। এরপর তার পরিবার ও স্বজনেরা তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে সবুজকে ঢাকা শ্যামলিতে সিকেডি এ- ইউরোলজি কিডনি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাঁর দুটি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে।
বর্তমানে সে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ আশরাফুল আলম এর অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ‘ডাক্তার আশরাফুল আলম বলেছেন,তাকে দ্রুত অপারেশন করাতে হবে।’ প্রতিদিন তার প্রায় ২/৩ হাজার টাকার ওষুধ খেতে হয় এবং এবং সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস করাতে অনেক টাকা খরচ হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। অপারেশন করতে শুধু ডাক্তার ফি বাবদ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা লাগবে। অপারেশনের আগে এবং পরে সব মিলে প্রায় ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এত টাকা যোগার করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অর্থের অভাবে তারা হাসপাতাল ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে এসেছেন,টাকার যোগার হলে আবার ঢাকা যাবেন। বর্তমানে উপজেলার বনগ্রাম কিডনি ফাউন্ডেশনে তাকে ডায়ালাইসিস করাচ্ছেন। অর্থের অভাবে তাকে চিকিৎসা করাতে পারছেননা তার গরীব অসহায় বাবা।
সবুজ আলীর বাবা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার শুধু দুটি ছেলে আর কোন সন্তান নেই। ছোট ছেলে সজীব (২০) জন্মের পর থেকেই মানষিক প্রতিবন্ধী। আমার ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। কষ্ট করে ছেলেটাকে পড়ালেখা করাচ্ছিলাম যাতে করে পরিবারটি শিক্ষিত পরিবার হয়। এখন আর কোন স্বপ্ন নেই,আমার ছেলেটা বাঁচলেই আমি খুশি। আমি অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারছিনা। দুই ছেলেসহ চার জনের সংসার আমাদের। আমি দিনমজুরের কাজ করে অনেক কষ্ট করে সংসারের খরচ বহন করি। শেষ সম্বল বাড়ির জায়গাটুকু ছিল সেটাও বিক্রি করে দিয়েছি। ছেলের চিকিৎসার জন্য এত টাকা যোগার করা আমার একার পক্ষে সম্ভব না। তার চিকিৎসার জন্য সরকার,সমাজ তথা দেশের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছি।’ সবুজের মা সবিতা খাতুন আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেন,‘আমার দুটি ছেলের একটি প্রতিবন্ধী তাকে ২০ বছর ধরে অনেক কষ্ট করে মানুষ করছি। ভাবছিলাম বড় ছেলেটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে চাকরি করায়ে সংসারের হাল ধরাবো। আমার সব আশা শেষ,আর কোন আশা নেই, সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যাচ্ছে।অনেক আদরের ছেলেটা আমার অর্থ ও চিকিৎসার অভাবে চোখের সামনে মারা যাবে মা হিসেবে আমি কেমনে সইব!
সবুজের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা করতে তার বাবা মোঃ নাজিম উদ্দিন-বিকাশ নম্বর (ব্যাক্তিগত) ০১৭৪৩৫২১২৫০,নগদ নম্বর-০১৩১৩১৮১৮৮০। মা-মোছাঃ সবিতা খাতুন,সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর-২০৫০৭৭৭০২০৮২০৭৮০৬, ইসলামি ব্যাংক(এজেন্ট ব্যাংক), আতাইকুলা শাখা, পাবনা। চাচা- মোঃ হাসান আলী, হিসাব নম্বর-০৪৭১১১০০০০২২৮, ইউনিয়ন ব্যাংক, আতাইকুলা শাখা,পাবনা। সবুজ-বিকাশ,নগদ,রকেট নম্বর-০১৩০৫২০১১৪১।