নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ গত দুই দিনে আরো দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। এনিয়ে গত গত পাঁচ দিনে পাঁচ নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হলো। এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয় উপজেলা সদরের মাত্র এক বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে থেকে।
সবশেষ বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে উদ্ধার করা হয় দিপ্তী রাণী (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ। তিনি উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের কুঞ্জবন গ্রামের সুকুমার চন্দ্র মন্ডলের মেয়ে ও কুঞ্জবন বন্দর কারিগরি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, সকাল ৯টার দিকে দিপ্তী রাণী তার শোবার ঘরের টিনের চালার বাঁশের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়। জানতে পেরে বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। মহাদেবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়ব্রত পাল, মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
আগের দিন মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে উদ্ধার করা হয় রেশমা বেগম (২৭) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ হোসেনপুর গ্রামের রাব্বি মন্ডলের স্ত্রী। নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে সকালে রেশমা বেগম কীটনাশক পান করেন। জানতে পেরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। মহাদেবপুর থানার এসআই আবদুল খালেক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান।
এছাড়া সোমবার (১৩ মার্চ) দপুরে উপজেলা সদরের বালুকাপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় রঞ্জনী রানী (৬০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ। তিনি ওই এলাকার মৃত সন্তোষ চন্দ্র মন্ডলের স্ত্রী। বাড়িতে একা থাকার সুবাদে তিনি তার শয়নঘরের তীরের সাথে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দেন।
রোববার (১২ মার্চ) বিকেলে উপজেলা সদরের লিচুতলা পূর্বপাড়া মহল্লায় নানা ফজলুর রহমানের বাড়ি থেকে মেরাজুম মনিরা মিম (১৮) নামে এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের মাদিশহর গ্রামের আবদুল মান্নানের মেয়ে এবং উপজেলা সদরের জাহাঙ্গীরপুর সরকারি বালিক উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের দ্বাদশ বর্ষের শিক্ষার্থী। সকালে মিম তার মায়ের সাথে নানা বাড়ি বেড়াতে আসেন। সেখানে কাপড় কেনাকাটা নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দুপুরে দোতলার একটি ঘরে গিয়ে দরজা জানালা বন্ধ করে ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়।
এছাড়া শুক্রবার (১০ মার্চ) সদর ইউনিয়নের বকাপুর গ্রাম থেকে জিন্নাতুন খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি ওইগ্রামের এনামুল হকের স্ত্রী। পারিবারিক কলহের জের ধরে জিন্নাতুন তার শোবার মাটির ঘরের টিনের চালের তীরের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।