বাবুগঞ্জে নূরজাহান হোটেল এ- রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে ভোক্তাদের থেকে অতিরিক্ত মুল্যসহ মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার পরিবেশন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার রাখা, বাসি-পচা খাবার মজুদ করাসহ ভোক্তাদের হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর বিমানবন্দর মোড় এলাকায় সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে গড়ে উঠা নূর জাহান হোটেল এ- রেস্টুরেন্ট এর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন পচাবাসি ও নিন্ম মানের খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছ থেকে চড়া মূল্য হাতিয়ে নিচ্ছেন। এমনকি গরুর পা(পায়া) প্রক্রিয়াজাত করে রান্না করেন ভোক্তাদের উদ্দেশ্যে যা দৈনিক বিক্রির পরে ফ্রিজিং করে দিনের পর দিন বিক্রি করেন। এসব খাবার বাসি অবস্থায় পুনরায় গরম করে বিক্রি করেন।
জানাগেছে নূর জাহান হোটেলটি মড়াসড়কের পাশে হওয়ায় এর মূল ভোক্তা বিভিন্ন পরিবহনের চালক, হেলপার, যে কারণে দূর দূরান্ত থেকে আসা এসব ভোক্তাদের কাছে পচা বাসি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করেন।
এমনকি হোটেলটিতে খোলা এবং নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে সব প্রকার খাবার। এ ছাড়া খোলা জায়গায় ধুলাবালিতে রাখা হচ্ছে পরোটা, পায়া, কলিজা,সহ হোটেল রান্নাকৃত খাবার।
হোটেলটির পেছনে খাবার তৈরির জায়গা দেখলে সচেতন মানুষ আঁতকে উঠবেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি খাবার মানুষকে খাওনো হচ্ছে।
বাবুগঞ্জের রহমতপুর এলাকায় অসংখ্য খাবার হোটেল গড়ে উঠেছে। এসব হোটেলের মধ্যে গুটি কয়েক ছাড়া বাকিগুলোর রানাঘরের অবস্থা দুর্গন্ধযুক্ত, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। রান্না করার অংশে সাধারণত গ্রাহকদের প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। হোটেলের সামনের সাজসজ্জা করা অংশে খাবার খেয়ে বিল পরিশোধ করে বেরিয়ে পড়েন গ্রাহকরা। কিন্তু কোনো গ্রাহক যদি এসব হোটেলের রান্নাঘরের পরিবেশ দেখতেন তাহলে কেউই খাবার মুখে তুলতেন না। এসব অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি খাবার দিয়ে মানুষকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছেন।
রহমতপুর এলাকার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে বেশকিছু খাবার হোটেল ঘুরে দেখা গেছে রান্নাঘর ও সামনের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন তবে বেশিরভাগ খাবার হোটেল মালিক পরিবেশনের জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখলেও রান্নাঘরের অবস্থার দিকে নজর দেন না। রান্নাঘরের পরিবেশ নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। আবার হোটেলের সামনের জায়গায় চুলো বসিয়ে সকাল সন্ধ্যায় পরোটা-বিকালে পুড়ি, কাবাব, চিকেনচাপ তৈরি করছে। এসব খাবার রাখা হচ্ছে খোলা। মহাসড়কের গাড়ি চলার কারণে তাতে পড়ছে ধুলাবালি আর ভন ভন করছে মাছি। কড়াইগুলোতে পুরনো তেলেই চলছে ভাজাপোড়ার কাজ।
বাবুগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি জহিরুল হাসান অরুন বলেন, রহমতপুর এলাকার বেশিরভাগ খাবার হোটেলের রান্নাঘরের পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহেরও ব্যবস্থাও নেই। গ্রাহকসেবার মান একেবারেই নিন্মমানের। খাবার হোটেলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। অধিকাংশ হোটেলের ফুড প্রসেসিং লাইসেন্স নেই। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
দোকানে খেতে আসা মোঃ নুরুল আলম, মোঃ রফিকুল ইসলাম সহ অনেক ভোক্তারা বলছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ঝিমিয়ে পড়ায় বাবুগঞ্জে খাবার হোটেল গুলোতে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ফাতিমা বলেন, অপরিচ্ছন্ন, অস্বাস্থ্যকর ও ভেজাল খাবার বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
নূরজাহান হোটেল এ- রেস্টুরেন্ট এর মালিক মোঃ রাসেল শরীফ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- আমি পরিচ্ছন্ন ভাবে খাবার রান্না করি। আর আমার রেকর্ডীয় সম্পত্তিতে হোটেল নির্মাণ করেছি।