রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কর্মস্থলে না থেকে মাঝেমধ্যে জামাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার করার অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে মাঝে মধ্যে কর্মস্থলে না থেকে জামাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করায় দিন দিন ভেঙ্গে পড়ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। এ বিষয়ে শিক্ষক -শিক্ষার্থী, অভিভাবক সহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসেন বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে বিশেষ করে মেহনগঞ্জ হাটবার বৃহস্পতি ও কর্মস্থলে সময় না দিয়ে বাগমারা উপজেলার মোহনগঞ্জ বাজারে নিজ আত্মীয় জামাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মুরগি বিপনী বিতানে সকালের দিকে বেচাকেনাই ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন। তিনি কোন কোনদিনই সময় অনুযায়ী কর্মস্থলে উপস্থিত হন না। এই অনিয়মের কারণেই ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক জানান, নওপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন সঠিক সময়ে কোনদিনই বিদ্যালয় উপস্থিত হন না এমনকি অনেকদিন বিদ্যালয়ে আসেন না তিনি, কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা রেজিষ্টারে প্রতিদিনই উপস্থিত দেখিয়ে সঠিক সময়ের মিল রেখে স্বাক্ষর করে থাকেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসেন স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় এ বিষয়ে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেন না। ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর আলী নামের এক অভিভাবক স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। আমার মেয়ে অসুস্থ হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে আসতে পারে নাই, বিষয়টি জানানোর জন্য সকাল ১০ টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে আসলে তিনি বিদ্যালয়ে না থাকায় বিষয়টি জানাতে পেরে ফিরে চলে এসেছি। বিদ্যালয়ে এসে জানতে পারলাম প্রধান শিক্ষক সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসেন না। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় সঠিক সময়ে এসে বিদ্যালয়ের উপস্থিত না হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা কিভাবে চলবে। এক বিষয়টি পরিচালনা কমিটি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সবসময় তদারকি করা উচিত বলে আমি মনে করি। এ বিষয়ে নওপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জামাইয়ের মুরগির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সময় দেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, আমি সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করি তবে সেটা বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ের বাহিরে। অনেকদিন বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের কাজে রাজশাহী শহরে যাওয়ার সময় হয়তো জামাইয়ের দোকানে ব্যাগ বা কাগজপত্র রাখার জন্য সময় দিয়েছি, আর এই বিষয়টি দেখেই হয়তো আপনাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেছে। তিনি আরো বলেন, আজ ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টায় বিদ্যালয়ে এসে অনলাইনে কাজ করছি। আমাকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে কোন এক পক্ষ আমার বিরুদ্ধে রাজশাহী আদালতে ৩/৪টি মামলাও করেছে। কোন অনিয়মের সাথে জড়িত না আল্লাহ আমার সাথে আছেন। এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহীদুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নওপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন মোহনগঞ্জ হাটবারের দিনে সকালের দিকে কর্মস্থলে না থেকে কিছু সময় তার জামাইয়ের দোকানে ব্যয় করার বিষয়টি শুনলাম এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।