খুলনার পাইকগাছায় শিবসা নদী এলাকাবাসীর জন্য অভিশাপ হয়েছে দাঁড়িয়েছে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে নদীর পাইকগাছা অংশে প্রায় ১৫ কিলোমিটা ভরাট হয়ে গেছে। এ সুযোগে ভূমি খেকোরা গিলেফেলছে নদীটি। উপজেলা সদরের শিববাটী ব্রিজ থেকে হাড়িয়া পর্যন্ত শিবসা নদীর প্রায় ১৫ কিমি. ভরাট হয়ে গেছে। যা ভূমি থেকে উঁচু হয়ে গেছে। নদীটি খননের জন্য বিভিন্ন সংস্থা, বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সভা সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সহ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হয়েছে স্মারকলিপি। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে দ্রুত খনন করা হবে। কিন্তু বছর পার হয়েছে কয়েকটি। অগ্রগতি নেই কিছুই। বরং উল্টো নদীর জায়গা ভূমি খেকোরা ইচ্ছে মত দখল করে মাছের ঘের ও স্থাপনা তৈরী করছে। শিবসা নদীটির দৈর্ঘ্য ৮৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৫১০ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক শিবসা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং-৮৮। নদীটি উপজেলার লস্কর ইউনিয়নে প্রবাহমান কপোতাক্ষ নদ হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীর জলধারা একই জেলার দাকোপ উপজেলার খুলনা রেঞ্জ এলাকায় প্রবাহমান পশুর নদীতে নিপতিত হয়েছে। গত কয়েক বছর আগেও নদীতে সারাবছর নৌযান চলাচল করতো। জোয়ার ভাটার প্রভাবে প্রভাবিত হতো। এই নদীর কিছু অংশ বাংলাদেশ-ভারত প্রটোকল রুটের অন্তর্গত। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দ্বিতীয় শ্রেণীর নৌপথ হিসাবে স্বীকৃত। শিবসা নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার ভরাট হয়ে গেছে। অনেকে নদীর জায়গায় বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করছেন। যে কারণে দিন দিন নদীর জায়গা কমছে। নদীর বক্ষে পলি পড়ে সমতল ভূমি হয়েছে। এ ছাড়া নদীর জমি দখল করে চিংড়ি ঘের করেছে অনেক প্রভাবশালীরা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাহ হোসেন নদীটি অবৈধ দখলমুক্ত করতে ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। একাধিক বাঁধবন্ধি মাছের ঘের ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। এ ব্যাপারে দু'পাড়ের দখলবাজদের কেউ-কেউ বাপ দাদার রেকর্ডীয় বা সিকিস্তি জমি দাবি করেন। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা রাজু আহম্মেদ বলেন, নদী খননের জন্য কর্তৃপক্ষকে লেখা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে কাজ হবে, তবে সময়ের ব্যাপার। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, পাইকগাছায় পর্যায়ক্রমে সকল সরকারি সম্পত্তি অবৈধ দখলদারদারদের কবল থেকে মুক্ত করা হবে।