রাজধানীর বাসে যাতায়াতকারী যাত্রীদের জন্য ই-টিকেটিং চালু হওয়ার পর বাসের ভাড়া আদায়কারী ও যাত্রীদের মধ্যে অনেকটাই ঝগড়া বিবাদ কমে এসেছিল। কিছু সমস্যা তাৎক্ষনিক থাকলেও বাস মালিক সমিতি বলেছিল, খুব অল্পদিনের মধ্যে সে সমস্যা গুলো শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে অন্যকথা, কোনো সমস্যাই সমাধান হয় নি, বরং অনেক বাসেই টিকেট দেওয়া হচ্ছে না নানা অজুহাতে। রোল ফুরিয়ে গেছে, মেশিনে চার্চ নাই, টিকেট দিলে ভাড়া আদায়ে দেরি হয় কিংবা পরে টিকেট দিচ্ছি বলে যাত্রীদের টিকেট দেওয়া হচ্ছে না। অথচ মালিক সমিতির সুস্পষ্ট ঘোষণা ছিল আগে টিকেট নিবেন তারপর টাকা দেবেন। কিন্তু তাদের এ ঘোষণার ব্যাত্তয় ঘটেছে। যা দেখার কেউ নেই। যদিও বলা হচ্ছে, এসব দেখভাল করার জন্য আটজন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে। এ ক্ষেত্রে আরও লোকবল বাড়ানো হবে পরিবর্তিতে বলে জানানো হয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীতে পরীক্ষামূলক ভাবে চারটি পরিবহন কোম্পানিতে ই-টিকেটিং চালু হয়েছিল। এরপর ২০ অক্টোবর থেকে রাজধানীর সব বাসেই ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালু হয়। এতে বাস শ্রমিকদের সাথে যাত্রীদের ঝগড়া বিবাদ অনেকটাই কমে আসে। কিন্তু রাজধানীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানের এ্যাপস না থাকায় যাত্রীদেরও অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা চোখে পড়ে নি। টিকেটে কোথা থেকে কোথায় পর্যন্ত ভ্রমণ করছেন, তা লিখা আছে। কিন্তু তার দূরত্ব কত কিলোমিটার তা উল্লেখ করা নেই। টিকেটে অভিযোগের দু’টি নম্বর থাকলেও সেখানে ফোন করে কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। তাই যাত্রীরা সে নম্বর দু’টিতে ফোন করেন না। ছাত্রদের জন্য হাফ ভাড়ার ঘোষণা থাকলেও রাত আটটার পর তা কার্যকর করা হয় না। সন্ধ্যা কালীন ক্লাস ও লাইব্রেরী করে ছাত্র-ছাত্রীদের বাসায় ফিরতে রাত ন’টা দশটা বেজে যায়। অন্যদিকে শুক্র-শনি বার বন্ধের দিন বলে এ দু’দিন ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে পুরো ভাড়া আদায় করা হয়। কিন্তু বন্দের দিনও যে ছাত্র-ছাত্রীরা গ্রুপ স্টাডি, নোট আদান প্রদানের জন্য ঘর থেকে বের হন, তা কি ভুলে গেছেন সরকারের নীতি নির্ধারকরা বা পরিবহন মালিক সমিতির কর্তা ব্যক্তিরা। এ ব্যবস্থার অবস্থান জরুরি। যে সব স্থানের এ্যাপস নেই সেগুলো বহাল করে সব সময় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি। তাছাড়া টিকেটে ভ্রমণ দূরত্ব উল্লেখ করে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের বিতন্ডা দূর করার যথাযথ ব্যবস্থা সংশ্লিষ্টরা গ্রহণ করবেন বলে মনে করি।