সৈয়দপুরে দীর্ঘদিন থেকে খানাখন্দে ভরা শেরে বাংলা সড়কটি। শহরের তামান্না সিনেমা হল থেকে ওয়াপদা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কটির বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন থেকে ওই সড়কটির বেহাল অবস্থা বিরাজ করলেও পৌর মেয়র নিরব। এ সড়কে প্রতিদিন ছোট বড় হাজারো যানবাহন চলাচল করে। খানাখন্দে ভরা সড়কটি এক পর্যায় যাতায়াতে অনুপযোগি হয়ে পড়ে। পথচারির চাপে ভাঙ্গা সড়কটি করা হয় সংস্কার কাজ। এতে ব্যয় হয় ২৮ লাখ টাকা। ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয় সড়কটি। ওই সংস্কার কাজের স্থায়িত্ব ধরা হয়েছিল বড় জোর তিন মাস। কিন্তু সড়কটি সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার সাত দিনের মধ্যে আবার বিরাজ করে পুর্বের অবস্থা। দেখে মনে হয় এটি সড়ক তো নয় যেন ডোবা। সড়কের এ অবস্থা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকাবাসি। তারা বাধ্য হয়ে মাঠে নামে। করে মানববন্ধন। এতে যোগ দেন এলাকার হাজারো নারী পুরুষ। দাবি তাদের সড়কটি পুননির্মাণের। সড়কটি সংস্কার কাজ কেন হচ্ছে না এ ব্যাপারে কথা বলতে চান না ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ১নং প্যানেল মেয়র শাহিন হোসেন। ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুন্না সরকার ও ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক বলেন,বরাদ্দ এলে সড়কটির কাজ করা হবে।
সোহেল আহমেদের নেতৃত্বে ওই বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গির আলম ড্বাু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাবু, উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, অটোড্রাইভার মুরাদ, ভুক্তভোগী সারফারাজ, শাকিল আহমেদ, সোনিয়া খাতুন, রিফাত, দেলোওয়ার, শিফাত প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নওশাদ আনসারী। কর্মসূচীতে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগীরা বলেন, স্বাধীনতার পর সৈয়দপুরের ইতিহাসে এমন অযোগ্য মেয়র আর দেখেনি পৌরবাসী। যিনি শহর উন্নয়নের বিন্দুমাত্র আন্তরিক নন। শুধু আনো আর খাও এই নীতিতে তিনি চলছেন। অবিলম্বে মেয়রের পদত্যাগ দাবী করেন তারা। তারা আরো বলেন, প্রতি বছর শুধু রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দেয়া হয় কিন্তু সংস্কার কাজ আর হয় না। অথচ আমাদের পৌরসভা প্রথম শ্রেণির। এখানে যত খাজনা আদায় করা হয় তা বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুরেও হয় না। হাসপাতাল যেতে হলেও আমাদের ৩ কিলোমিটার পথ ঘুরে বিশ্বরোড দিয়ে যেতে হয়। এটা কোনভাবে মেনে নেয়া যায় না। মানববন্ধনে অংশ নেয়া অটো ড্রাইভার মুরাদ, ভুক্তভোগী সোনিয়া সুলতানাসহ অন্যান্যরা জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে এলাকার মানুষের চলাচলে দুর্ভোগের অন্ত নেই। সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ, অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিকে সড়কটির অবস্থার কথা জানানোর পরেও কোন কাজ হয়নি। পৌর মেয়রের যেনো বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই রাস্তা সংস্কারে। অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিতে হলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদেরকে। গত বছর এক মায়ের সন্তান প্রসব হয় এ সড়কে। যদি দ্রুত সময়ে পৌর মেয়র এ রাস্তা পুননির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ না নেন, তাহলে পরবর্তী সময়ে রাস্তা অবরোধ, পৌরসভা ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেয়া হয় মানববন্ধনে।
এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোহেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেখানে পুরো দেশকে স্মার্ট বানাতে দিনরাত মেহনত করে যাচ্ছে সেখানে আমাদের পৌর মেয়র একটি প্রথম শ্রেনির পৌরসভাকে উগান্ডা বানাতে তৎপর। এটা হতে দেয়া হবে না। বাজেট আসে কিন্তু রাস্তা ঠিক হয় না। পৌর মেয়রের স্বেচ্ছাচারিতায় পুরো শহরবাসী আজ অতিষ্ঠ। আমরা অযোগ্য মেয়রের অপসারণ চাই।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবী বলেন, ওই সড়কটি সংস্কার করতে আমি নিষেধ করেছিলাম। বলেছিলাম দুই লাখ টাকা দিয়ে শুধু খাল গুলো ভরাট করা হোক। এরপর টাকা বরাদ্দ এলে সড়কটি পুননির্মাণ করা হবে। কিন্তু তারা আমার কথা শুনেনি। অযথা ২৮ লাখ টাকা এখানে নষ্ট করা হল। এ ব্যাপারে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, সড়কটি আসলে চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। আমরা সড়কটি পুননির্মাণ করতে বাজেট ধরেছিলাম ১০ কোটি টাকা। কিন্তু বর্তমানে সড়ক নির্মাণের সমস্ত উপকরণের মুল্য বেড়েছে তিনগুন। এতে করে এখন সড়কটি পুননির্মাণ করতে গেলে প্রায় ১৫ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। তাই অর্থ সংকটে সড়কটির পুননির্মাণ কাজ কিছুটা বিলম্ব হবে।