নদী এপাড় ভাঙ্গে ওপার গড়ে এইতো নদীর খেলা। ঘোড়াউত্রা নদীর উপশাখা ধারু নদীটি মাইজচর ইউনিয়নের পাড়কচুয়া ও পাশর্^বর্তী গ্রাম বোয়ালী শিবপুর পর্যন্ত একসময় নৌকা দিয়ে মানুষ আসা-যাওয়া করতো। কিন্তু সেই নদীটি শুকিয়ে এখন খালে পরিণত হয়েছে। গত ১৫ দিন আগে ধরু নদীটি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে পারকচুয়া আইনারগোপ ইরি বোরো ধানের ২ হাজার একর জমি এখন পানি পাচ্ছে না এই খাল থেকে। পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ধরু নদীর এপাড় ওপাড় হতে একটি সাকু দিয়ে এই দুটি গ্রামের লোকজনকে পাড়াপাড় হতে হয়। কিন্তু পারকচুয়া গ্রামের সাকুর মালিক মোঃ আলী হোসেন বলেন, পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে এখন মানুষ সাকু দিয়ে না গিয়ে নিচ দিয়ে চলে যাওয়ার কারণে তার আয় রোজগার একেবারেই কমে গেছে। যেখানে প্রতিদিন সাকু দিয়ে ৪ শত টাকা থেকে ৫ শত টাকা পেতেন। সেই জায়গায় এখন প্রতিদিন ১৫০ টাকা থেকে ২ শত টাকা পাওয়ার কারণে সংসার চালাতে গিয়ে তার খুব কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, কওমী মাদ্রাসার থেকে তিনি ৪০ হাজার টাকায় ইজারা নিয়ে চৈত্র মাস আসার পরও তার অর্ধেক টাকা রোজগার করতে পারেন নি। অন্যদিকে মাইজচর ও দিঘীরপাড় ইউনিয়নের বয়ে যাওয়া ঘোড়াউত্রা নদীর পাড়ের আছানপুর সহ পাশর্^বর্তী এলাকার মূল গ্রামটি ভেঙ্গে এখন বেংলা নদীতে পড়ে গেছে। গত ২৫ বছর থেকে ৩০ বছর আগে যেখানে ঘর ছিল, সেখানে অনেকে এই গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন জেলে পল্লীর মানুষগুলো। কেউবা ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে দিনমজুরের কাজ করে কোনরকম সংসার চালাচ্ছেন। এই পর্যন্ত শুকনো ও বর্ষা মৌসুমে আফালের কারণে গত ২০ বছরে এই ৩-৪ টি গ্রামের প্রায় ২ শত থেকে ৩ শত পরিবার ভিটেহারা হয়ে গেছেন। তারা পাশর্^বর্তী গ্রামগুলোতে গিয়ে মাথা গোজার ঠাই করে বেঁচে আছেন। কে কার কথা শুনে? যখন নির্বাচন আসে তখন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলের এমপি প্রার্থীরা এই নদীর পাড়ের মানুষদের বলে যায়, তারা পাশ করলে এই এলাকার উন্নয়ন করবে। কিন্তু উন্নয়ন হয়েছে কিনা এই এলাকার গরীব নিরিহ মানুষ কিছুই বলতে পারে না। যদিও ঘোড়াউত্রা নদীটি এত পলি জমে গেছে যে, যদি নদীটি খনন করা না হয় তাহলে এই নদীটিও একসময় মৃত প্রায় বেংলায় পরিণত হবে। কোন কোন পাড় পলি জমে বড় বড় চর হয়ে গেছে। এই চরে নিরিহ মানুষরা চাষাবাদ করার তো দুরের কথা, প্রভাবশালীদের দখলে এই চরটি যোগ যোগ ধরে চলে আসছে। বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামীম হুসাইন এই প্রতিবেদককে বলেন, তিনি এই বিষয়ে কোন কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করেন।