রিজেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার আপিল বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের চেম্বার জজ আদালত আট সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। এর আগে ১৫ মার্চ হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছিল। আইনজীবী জানান, এজাহার মতে ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে সাহেদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে একটি মামলা করেন সিআইডির উপপরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন। প্রায় দেড় বছর তদন্ত শেষে সেই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রে সাহেদ ও রিজেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজসহ সহযোগীদের বিরুদ্ধে মোট ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত শেষে মহামারি শুরু হলে সাহেদ তার প্রধান সহযোগী মাসুদ পারভেজের মাধ্যমে রিজেন্ট ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের নামে মিউঁচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে একটি হিসাবও খোলা হয়। ওই হিসাবটি পরিচালনা করেন মাসুদ পারভেজ ও তার বাবা সিরাজুল করিম। ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ওই হিসাবটিতে মোট ৩ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ২২৭ টাকা জমা হয়। সিআইডির তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে, সাহেদ জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কোভিড সার্টিফিকেট দেওয়ার নামে জনপ্রতি যে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে নিতেন, সেসব অর্থ এই হিসাবে জমা হতো। জালিয়াতির অর্থ ও প্রতারণার অর্থ তিনি তার নিজের ও সহযোগীদের নামে ছাড়াও রিজেন্ট হাসপাতাল এবং অস্তিত্বহীন ১২টি প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ৪৩টি হিসাব পরিচালনা করতেন। এসব হিসাবে মোট ৯১ কোটি ৭০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৭ টাকা জমা হয়। এরমধ্যে ৯০ কোটি ৪৭ লাখ ৯১ হাজার ৫২৪ টাকা উত্তোলন করেন। বর্তমানে এসব হিসাবে ২ কোটি ৪ লাখ ৩৯ হাজার ১১ টাকা স্থিতাবস্থায় রয়েছে। আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সাহেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজসহ সহযোগীরা প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলনের মাধ্যমে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর বিভিন্ন ধারায় অপরাধ করেছেন। প্রতারণা ও জালিয়াতি কাজে ব্যবহারের জন্য তার মালিকানাধীন তিনটি প্রতিষ্ঠানও অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত করা হয়।