দ্রব্যমূল্য বাড়ছেই। রমজান মাস সামনে রেখেও বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরছে না। প্রতিদিনই কোনো না কোনো খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সর্বশেষ ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২২ টাকা পর্যন্ত বেড়ে হয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা যা সাধারণ ক্রেতাদের পক্ষে কেনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ব্রয়লার মুরগির বর্তমান দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি কেজি প্রায় স্বাভাবিক দামের থেকে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মাসখানেক আগেও প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। এক প্রতিবেদনে দেখা যায় প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন ব্যয় কর্পোরেট পর্যায়ে ১৩৫-১৪০ টাকা। প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বেচা হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকায়। ব্রয়লারের দাম বাড়ার কারণে এখন বেড়েছে সোনালি ও কর্কসহ দেশি মুরগির দামও। দেশি মুরগির দাম সাধারণের নাগালের বাইরে গেছে অনেক আগেই। কয়েক সপ্তাহ আগে সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়। এখন সেটা ৩৭০-৩৮০ টাকা। সোনালি মুরগির পাশাপাশি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকায় যা কিছুদিন আগেও ৪৮০-৪৯০ টাকায় পাওয়া যেত। সাধারণত দেখা যায় শবে বরাতের পর মুরগির দাম কিছুটা কমতে শুরু করে। কিন্তু এবার ভিন্ন পরিস্থিতি। প্রতি সপ্তাহেই মুরগির দাম বেড়েছে। রোজার আগে আরেক দফা দাম বাড়ল। এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো একশ্রেণির অসাধু চক্র বা বাজার সিন্ডিকেট। তাদের কারণে খুচরা বাজারে দাম এত পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। আবার দেখা যায় দোকানে মূল্য তালিকা টানানো বাধ্যতামূলক হলেও তা মানা হচ্ছে না। পাইকারি পর্যায়ে রসিদ বা ক্যাশ মেমো সংরক্ষণ করা হয় না একই সঙ্গে ক্রেতাকেও রসিদ দেওয়া হয় না ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা ঠিকই পার পেয়ে যাচ্ছে। এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে সরকারকে বেশ কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকার থেকে মুরগির একটি নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে। পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাজারে অত্যধিক মূল্য বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ও রোজা উপলক্ষে পোলট্রি বাজারে স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ভোক্তা অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তর-সংস্থার সমন্বয় করে দেশব্যাপী নিবিড়ভাবে বাজার তদারকি ও অভিযান পরিচালনা করতে হবে। অযৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে বাজার অস্থিতিশীল করার প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সরকার যদি এই পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করতে পারে তাহলে আশা করা যায় রমজানে মুরগির দাম জনসাধারণের নাগালে আসবে।