মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে সরকারি একোয়ারকৃত জমিসহ তিন ফসলী জমির মাটি কেটে মাদরাসার নামে চলছে অন্য জমি ভরাট। অভিযোগ উঠেছে ভূয়া মাদরাসার নামে একাধিকবার এমন কর্মকান্ড চালাচ্ছেন মো. সাইদুল ইসলাম নামের এক স্বর্ণব্যবসায়ী। তিনি উপজেলার আরমহল গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
এলাকাবাসী অনেকে জানান, গত দুই সপ্তাহ যাবৎ আরমহল মৌজার সরকারি একোয়ারকৃত জমি আর এস ২২৯ দাগ ও অন্য মালিকানা ১৭৩ দাগ, এছাড়া তাদের দাবীকৃত ১৭৪ ও ১৭৫ মাটি কেটে প্রায় এক একর জমির শ্রেণি বদল করেছে। এছাড়া ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটায় আশপাশের ফসলি জমির অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। তবুও এলাকার অনেকে জানান, এ সাইদুল এলাকার একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নিয়ে জমির কাজ করে। যেখানে কোন জমির সমস্যা থাকে সেগুলো কিনে ক্ষমতা দেখিয়ে দখল করে নেয়। আবার কিছু ওয়ারিশদের থেকে জমি লিখে নিয়ে পুরোটাই দখল করে।
পাশের জমির মালিক সেরাজল ও তার ভাগিনা বিপ্লব মাদবর জানান আমাদের জমির কিছু মাটি কেটে নিয়েছে, আমরা বাধা দেওয়ায় সরে গিয়ে অন্য জমি কেটে মাটি নিয়ে তার কেনা বিতর্কিত জমিতে পাহাড় বানিয়ে রেখেছে। ৬ দিন আগে থানা থেকে এএসআই ইমরান এসে মাটি কাটতে নিষেধ করে গেছে, ২ দিন বন্ধ থাকার পর আবার মাটিকাটা শুরু হয়েছে। এলাকাবাসী যাতে বাধা না দেয় সেজন্য ভূয়া মাদরাসার নামদিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে। এর আগেও এই জমির পূর্বপাশে মাদরাসার নাম দিয়ে সরকারি জমি, হিন্দু জমি নিজেদের নামে কাগজ করেছে। অল্প কয়দিন কিছু বাচ্চাদের আরবি শিক্ষা দিয়ে এখন সেখানে গড়ে তুলেছে গরুর খামার। মালখানগর ইউপি মহিলা সদস্য ঝর্না বেগম জানান, আগের মাদরাসা বন্ধ, ছাত্র-ছাত্রী কেউ যায় না। সাইদুলরা এখন বলছে যেখান থেকে মাটি কাটতেছে সেখানে নাকি নতুন করে মাদরাসা করবে। এজন্য পাশের জায়গাও কিনতেছে। মো. সাইদুল ইসলাম জানান, আমি কারো জমি কাটি নাই, আমার জমির মাটি কেটে ভরাট করছি। কারো জমি দখল করি নাই, আমার জমির পাশে মরহুম সাত্তার বেপারী ও ওয়াহেদ আলী বেপারীর ওয়ারিশ গনের নিকট থেকে কিনেছি। আর কিছু ওয়ারিশ বাকি আছে তারাও কথা দিয়েছে আমাকে জমি দিবে। এখানে একটা কওমি মাদরাসা করবো। কাজ শেষ হলে এই সম্পত্তি মাদরাসার নামে ওয়াক্ফ করে দিবো। মালখানগর ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে স্পটে গিয়েছি। মাটি কেটে বিরাট এলাকা স্তুপ করে রেখেছে। আশপাশে কেউ নাই, তাদের খবর পাঠিয়েছি, আসলে কথা বলবো। আরো ভালোভাবে তদন্ত ও পর্যবেক্ষণ করে বিষয়টি সহকারি কমিশনার ভূমিকে জানাবো। উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি উম্মে হাবিবা ফারজানা জানান, আজ (সোমবার) আমি জানতে পেরেছি। স্থানীয় নায়েবকে বিষয়টি দেখে জানাতে বলেছি। বিস্তারিত তথ্য পেলে আইনের আওতায় হলে যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।