মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার নিবিড়চর ও পয়স্ত হোসেন্দী গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে মেঘনার একটি শাখা নদী। তবে রবিবার রাত থেকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র বালু ভরাট করে নদীর বড় একটি অংশে বাঁধ নির্মাণ করায় বন্ধ হয়ে গেছে নৌ চলাচল। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে পাঁচটি গ্রামের অন্তত ১২ হাজার মানুষ।
সরোজজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় মেঘনা নদীর অববাহিকায় তার একটি শাখা নদীকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে নিবিড়চর, পয়স্ত হোসেন্দী, টেঙ্গারচর, খাড়াকান্দি ও বড় ভাটেরচর নামে পাঁচটি গ্রাম। হোসেন্দী ইউনিয়নের মূল ভূখণ্ড এবং গ্রামগুলোতে একটি সাথে আরেকটি যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম মেঘনার একটি শাখা নদী। রবিবার রাত থেকে নদীর নিবিড়চর ও পয়স্ত হোসেন্দী অংশে অনবরত বালি ফেলা হচ্ছে। নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এতে বন্ধ হয়ে গেছে নৌযান চলাচল। নদীর দুই ধারে অপেক্ষমান রয়েছে অন্তত ১৭/১৮ টি ট্রলার ও ৩৫/৪০টি নৌকা। স্থানীয়রা জানায় বাজার হোসেন্দী গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন হঠাৎ করেই নদীতে বালু ভরাট শুরু করে দিয়েছেন। এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাকে কেউ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না।
স্থানীয় কৃষক হুমায়ুন জানান, অন্যান্য দিনের মতো তিনি আজকেও গবাদি পশুর জন্য ঘাস কেটে নৌকায় করে বাড়ি ফিরছিলেন। বালু ফেলে নদীতে বাঁধ তৈরি করে ফেলা হয়েছে। সেজন্য এখানে নৌকা রেখে মাথায় করে ঘাস নিয়ে বাড়ি ফিরছেন তিনি।
স্থানীয় ট্রলার চালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হঠাৎ করেই এই নদী পথে বালু ভরাট করার কারণে তাদের ট্রলারগুলো বন্ধ করে রাখতে হয়েছে। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ আর আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে মারাত্মক অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়লেন তারা।
স্থানীয় একটা স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও পয়স্থ শরীফ হোসেন বলেন, নৌকায় করে এই নদী পার হয়ে হোসেন্দী হাই স্কুলে যায় এই গ্রামের শতাধিক শিক্ষার্থী তবে হঠাৎ করে নদী ভরাট করে ফেলায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ করেছে তাদের কপালে।
বিষয়টি সম্পর্কে হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, নদীর যে জায়গায় বালুঘাট করা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে সরকারী জায়গায় এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন।
তবে বালু ভরাটকারি দেলোয়ার হোসেনের দাবি এটি ব্যক্তি মালিকানের জায়গা আর সাম্প্রতি তিনি তা কিনে নিয়েছেন। তার ক্রয়কৃত জায়গায় বালু ভরাট করছেন তিনি। যারা সরকারী জায়গা বলছেন তাদের দাবি সত্যি নয়।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জি.এম. রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পরে তৎক্ষণাৎ আমি ঘটনাস্থলে লোক পাঠাই। আমাদের যাওয়ার খবরে আগেভাগেই ড্রেজার সরিয়ে নিয়েছে চক্রটি। তবে এখনো তাদের পাইপ রয়ে গেছে। বালু ভরাট কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। আমি মঙ্গলবার দিন সরোজমিনে ঘটনাস্থলে যাবো।