ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে মাত্র দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের ৩ দিন পার হা হতেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ পাখর ও পিচের ঢালাই। রাস্তাটি নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্ন মানের বিটুমিন, ইট ও বালি ব্যবহার করা হয়েছে এই রাস্তায়। রাস্তাটি পুনরায় নির্মাণের দাবি তাদের। দীর্ঘদিন পর এ সড়ক টি পিচ পাথরের রাস্তা নির্মানের কাজ শুরু হয়। কালীগঞ্জ উপজেলার চাপরাইল বাজার থেকে সিংগী বাজার পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের কাজটি পায় কাঞ্চননগর এলাকার ঠিকাদার নিশিত বসু। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩ (আইআরআইডিপি) এর আওতায় রাস্তাটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয় ৮১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৩৭ টাকা। এই কাজটির তদারকির দায়িত্বে ছিলেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু তাহের। ঠিকাদার নিশিত বসুর কাছ থেকে কাজটি নেন ঝিনাইদহের রাশেদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের প্রতিনিধি হিসেবে কাজটি দেখাশোনা করেন। সোমবার বিকেলে দেড় কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, গত কয়েকদিন আগে রাস্তাটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সোমবার বিকেলে কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তা নির্মাণে একদমই নিম্নমানের ইট, বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। রাস্তার পিচ এর পরিবর্তে টায়ার জ¦ালিয়ে সেটি ব্যবহার করা হয়েছে। অপরিষ্কার রাস্তায় পিচ ঢালায়ের কারণে সে গুলো উঠে যাচ্ছে। হাত দিয়েই তুলে ফেলা যাচ্ছে পিচ ঢালায়। দুইদিন পার হয়ে গেলেও পিস ও খোয়া জমাট বাঁধেনি। পিসের ঢালায় হাত দিয়ে উঠানো যাচ্ছে। সরেজমিন মঙ্গলবার সকালে সিংগী বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয়রা বিক্ষোভ করছেন। তারা রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় তারা হাত দিয়ে পিসের ঢালায় উঠে যাওয়ার দৃশ্য দেখান। পুনরায় তারা এ রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান এবং এর সাথে জড়িত সকলের শাস্তির দাবি জানান। সিংগী বাজার এলাকার সুজয় সাহা জানান, সরকার রাস্তা নির্মাণের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে আর ঠিকাদার সব মেরে খাচ্ছে। রাস্তার পিস দেওয়ার একদিনের মাথায় সব উঠে যাচ্ছে। এমন রাস্তা করার চেয়ে না করায় ভালো। ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনের চাকার সাথে পিস উঠে যাচ্ছে। একই এলাকার তপন কুমার ঘোষ জানান, সোমবার রাস্তার কাজ শেষ করেছে ঠিকাদার। মঙ্গলবার সকালে ভ্যান যাওয়ার সময় চাকার সাথে পিসের ঢালাই উঠে যাচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন রাস্তায় হাত দিলে পিসের ঢালায় উঠতে থাকে। এমন রাস্তা জীবনেও দেখিনি। রাস্তাটি পুনরায় নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করলে পিচ পাথর সবই উঠে যাবে। এলাকার মানুষ হাত দিয়েই তুলে ফেলছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রাশেদ হোসেন জানান, রাস্তার কাজ ইঞ্জিনিয়ার বুঝে নিয়েছেন। এখন আর কিছুই করার নেই। আর পিস জমাট বাঁধতে একটু সময় লাগে। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ দেখেছেন। একটু সময় দিলে পিস জমে যাবে।