সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মত নির্বাচন হবে। তারা (বিএনপি) তত্ত্বাবধায়ক সরকার খুঁজে পাবে অনলি ইন পাকিস্তান। দ্যাট ইজ নট এ গুড এক্সাম্পল ফর ডেমোক্রেসি। বুধবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টিকে পার্টিযান করে ফেলেছে বিএনপি। সেটা ২০০১ সালের ইলেকশনে। সেই নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে যে অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, বঙ্গভবনে শপথ নিতে না নিতেই কি হলো, ১৩ জন সচিব বাদ! তারা বায়াস্ট পার্টিযান তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় তাদের নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি দেবে এ রকম তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, তা সত্ত্বেও অনেকের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য কমছে, আস্তে আস্তে আরও কমবে। এ ঊর্ধ্বগতি সারা দুনিয়ায়। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়। দেখুন ফ্রান্স, জার্মানির কী অবস্থা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সারা দুনিয়াতে কস্টটা (খরচ) আছে। বাংলাদেশেও কষ্ট আছে। আমরা বেশি দামে কিনি অল্প দামে বিক্রি করি, এটাই তো বাস্তবতা। কাদের বলেন, কষ্ট অব লিভিংয়ের জন্য সারা দুনিয়াতেই কস্টটা আছে। কষ্ট শুধু বাংলাদেশে না। বাস্তবতাকে অস্বীকার করছি না। জিনিসপত্রের দাম এখন কয়েকটার কমেছে এবং আরও কমবে। সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে চেষ্টা চলছে। অন্য দেশে এক রাতের ব্যবধানে দেড়শ টাকার মুরগি আড়াশ টাকা হয় কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ রকম হয়, ইংল্যান্ডেও হয়েছে। এ অনিয়মগুলোর মধ্যে নিয়মও হচ্ছে। অভিযান তো চালাতে হবে। রমজান আসলে এ সময়টাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে। এসব বিষয় আমাদের দেশে নতুন নয়। আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে। তবে সরকার চুপ কর বসে আছে, তা তো নয়। সরকার তার দায়িত্ব পালন করছে। অ্যাকশন কিন্তু হচ্ছে। সিন্ডেকেটের বিরুদ্ধে এত উদ্যোগের পরও রেজাল্ট হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, রেজাল্ট না পেলে বাংলাদেশ অনেকের তুলনায় ভালো আছে এমন বলা যেতো না। আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট, চীনের প্রেসিডেন্ট, জো বাইডেনের স্টেটমেন্টে বাংলাদেশ এবং সরকার নিয়ে- এমনি তারা আশা করে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। সঙ্গে সঙ্গে এটাও বলেছে বাংলাদেশ যেভাবে এগুচ্ছে খুব দ্রুতই রিজনাল লিডার হিসেবে বাংলাদেশ আবির্ভূত হবে। বাংলাদেশে এ প্রশংসাগুলো কি শূন্য থেকে হচ্ছে? বাংলাদেশে প্রোগ্রেস থেমে থাকলে বিশ্বের বড় বড় দেশের নেতারা বাংলাদেশে প্রশংসা করে কেন? এগুলো কি অমূলক? হাওয়া থেকে করে তারা? আমি একটা কথাই বলব আমরা অনেকের চেয়ে ভালো আছি। এখানেও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে সেটা আমি অস্বীকার করছি না, সেটা স্বীকার করেই আমি বলছি আমরা অনেক ভালো আছি। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে একটি মন্ত্রণালয়ের সফলতা ও ব্যর্থতা বিচার করা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে পেরেছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটু কি খবর নিয়েছেন আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রতি মিনিটে কতগুলো অ্যাকসিডেন্ট হয়, কতলোক মারা যায়? গতকাল (গত মঙ্গলবার) সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন মারা গেলো। এটা নিয়ে আপনি কী বলবেন? অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে আপনি কথা বলবেন, চাকা ব্লাস্ট হয়েছে, এটা হতেই পারে। এরকম অ্যাকসিডেন্ট হতেই পারে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটা মন্ত্রণালয়ের যতগুলো মেগা প্রজেক্ট এ সরকারের আমলে উদ্বোধন হয়েছে, অনেকগুলোর কাজ প্রায় শেষ। এত সাফল্য, সেটাকে ম্লান করে শুধু অ্যাকসিডেন্ট। পৃথিবীর সব দেশে অ্যাকসিডেন্ট হচ্ছে। অ্যাকসিডেন্ট দিয়ে সফলতা ঢেকে দেওয়ার সুযোগ নেই। যেখানে সাফল্য বেশি সেটাকে অ্যাটাক করার মোটিভও থাকতে পারে। সৌদিতে দুর্ঘটনায় ২০ জন মারা যাওয়ায় সেখানে কেউ কিছু বলেছে বলে শুনিনি। ভারতে প্রতিদিন কত মানুষ মারা যাচ্ছে। অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে একটা মন্ত্রণালয়ের সাফল্য-ব্যর্থতার বিচার করা সঠিক নয়। আরপিও সংশোধন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রিসভায় কোনো প্রস্তাব এলে সেটা আগে নীতিগত অনুমোদন হয়, এরপর চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। আরপিও সংশোধনের যে প্রস্তাব সেটা (গত মঙ্গলবার) নীতিগতভাবে অনুমোদন হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন হয়নি। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগে চূড়ান্ত বলার সুযোগ নেই। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং হওয়ার পর চূড়ান্ত হয়। চূড়ান্ত অনুমোদনে আপনারা যা শুনছেন তা নাও তো হতে পারে।