অনলাইন প্লাটফর্মকে ব্যবহার করে নানা ধরনের অপরাধী চক্র সক্রিয় রয়েছে। তেমনই জাল টাকার কারবারিরাও বসে নেই। জাল টাকার কারবারিরাও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের কারবার চালাচ্ছে। জাল টাকার কারবার এখন অনলাইনেও চলছে। বিভিন্ন পেজ খুলে জাল টাকার বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে জাল টাকার কারবার। দেশের সবচেয়ে বড় উৎসব হলো ঈদুল ফিতর। এই ঈদে কেনাকাটাকে সামনে রেখে জাল টাকার কারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠছে। ‘অগ্রিম অর্ডার’ নিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এজেন্টদের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে হোম ডেলিভারিও। জাল টাকার চক্র সম্প্রতি ফেসবুকে নানা ধরনের জাল টাকা সংক্রান্ত পেজ খুলেছে। ‘জাল টাকা কম দামে বিক্রি করি’, ‘জাল টাকা বিক্রি’, ‘জাল নোট পাওয়া যায়’, ‘জাল টাকার পাইকারি বিক্রি’ ও ‘টাকা টাকা টাক’-সহ একাধিক পেজ রয়েছে। সেখানে জাল টাকার বিষয়ে নানা ধরনের তথ্যও দেওয়া হয়েছে। কম রেটে জাল টাকা সরবরাহ করা হয়। যোগাযোগের জন্য ইনবক্স, মোবাইল নম্বরও (হোয়াটস অ্যাপ) দেওয়া হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে বলা হয়েছে- যেকোনো নোট তারা সরবরাহ করতে পারবেন। দেশের যেকোনো জেলা হলেও সমস্যা নেই। একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল থেকে জানা যায়, জাল টাকা তৈরিতে যে কাগজ ব্যবহার হয়, সেগুলো নীলক্ষেত থেকে সংগ্রহ করা হয়। অন্যান্য উপাদানের সোর্স বিশেষ করে কেমিক্যাল পুরান ঢাকা থেকে নেয়। আর জাল টাকা বাজারে ছড়ানো হয় তিন ধাপে। আর প্রতিটি চক্রের রয়েছে ২০ থেকে ২৫ জন করে সদস্য। তারা বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কাজ করে। উৎপাদকের এক লাখ টাকা তৈরি করতে খরচ হয় সাত থেকে ১০ হাজার টাকা। তারা পাইকারি বিক্রেতার কাছে ১ লাখ টাকা ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রয় করে। পাইকারি বিক্রেতা প্রথম খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রয় করে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা, প্রথম খুচরা বিক্রেতা দ্বিতীয় খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রয় করে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় এবং দ্বিতীয় খুচরা বিক্রেতা মাঠ পর্যায়ে সেই টাকা আসল এক লাখ টাকায় বিক্রয় করে। এসব জাল নোট পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে কয়েকটি কুরিয়ার সার্ভিসও। জাল টাকা তৈরি কিংবা কেনাবেচার সঙ্গে জড়িতদের যেসব জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, সেসব এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি আরও বাড়ানো দরকার। জনসাধারণকে এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে। টাকা লেনদেনের সময় যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। তাহলেই কমানো সম্ভব এসব চক্রের দৌরাত্ম।