পবিত্র মাহে রমজানে নিত্যপন্য ও কাঁচাবাজারের পাশাপাশি দাম কমল তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি)। ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৪৪ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ১৭৮ টাকা নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। যা গত এক মাস আগে ভোক্তাপর্যায়ে এলপিজির দাম ছিল ১ হাজার ৪২২ টাকা। ২ এপ্রিল রোববার বিইআরসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নতুন দর জানানো হয়। সংস্থাটি প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে, তবে তা সব জায়গায় কার্যকর হতে দেখা যায় না। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তা দেখা হবে বলে জানান বিইআরসির চেয়ারম্যান মোঃ. নূরুল আমিন। এছাড়াও বিইআরসি থেকে যানা যায়, ঘোষিত নতুন দর ২ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে। ২০২১ সালের ১২ এপ্রিলের আগ পর্যন্ত এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। তবে ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন বলা হয়, আমদানিনির্ভর এই জ্বালানির দাম নির্ধারণে সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হবে। ফলে সৌদির দর ওঠানামা করলে ভিত্তিমূল্যও ওঠানামা করবে। তবে এ ক্ষেত্রে অন্যান্য কমিশন অপরিবর্তিত থাকবে। সেই ঘোষণার পর থেকে প্রতি মাসে এলপিজির দর ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি। জানা গেছে, বিইআরসি প্রতি কেজি এলপিজির খুচরা দাম ৯৮ টাকা ১৭ পয়সা নির্ধারণ করেছে। সে অনুযায়ী সাড়ে পাঁচ কেজি, ১২, ১৫, ১৬, ১৮, ২০, ২৫, ৩০, ৩৫ ও ৪৫ কেজি ওজনের সিলিন্ডারগুলোর দাম কমেছে। এলপিজির পাশাপাশি গাড়িতে ব্যবহৃত অটোগ্যাসের দামও কমেছে, প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৪ টাকা ৯০ পয়সা। এদিকে সরকারি পর্যায়ে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম পরিবর্তন হয়নি। সেটি আগের মতো ৫৯১ টাকাই রয়েছে। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে এলপিজি ১২ কেজি সিলিন্ডার গ্যাসের দাম ১ হাজার ২৩২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে মার্চ মাসে ভোক্তাপর্যায়ে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৯৮ টাকা থেকে ৭৬ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪২২ টাকা নির্ধারণ করেছিল বিইআরসি। বিইআরসি জানায়, বেসরকারি এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাটসহ) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি প্রায় ৯৮ দশমিক ১৭ টাকা, যা এতদিন প্রায় ১১৮ টাকা ৫৪ পয়সা ছিল। গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার প্রায় ৫৪ টাকা ৯০ পয়সা, যা এতদিন ছিল ৬৬ টাকা ২২ পয়সা। সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির দাম বাড়ানো হয়নি। রাজধানীতে যেসব ভবনে সরকারি কোম্পানি তিতাসের সরবরাহ করা প্রাকৃতিক গ্যাসলাইনের সংযোগ নেই, সেসব ভবনের বাসিন্দারা এলপিজি ব্যবহার করেন। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন শহর ও গ্রামে বিপুল সংখ্যক মানুষ এলপিজির ওপর নির্ভরশীল। সরকার গত ১৮ জানুয়ারি প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ৮২ শতাংশ বাড়িয়েছে। তবে তখন বাসাবাড়িতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়নি। বাসায় ২ চুলার ক্ষেত্রে মাসিক বিল ১ হাজার ৮০ টাকা। মাহে রমজানে নিত্যপন্য ও কাঁচাবাজারের পাশাপাশি দাম এলপিজির দাম কমাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের মুখে কিছুটা হলেও স্বস্তির চিহ্ন প্রকাশ পাঁচ্ছে।