ঝালকাঠিতে সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা গুরুতর জখম হয়েছেন। তাকে আশংকাজন অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ শিক্ষিকার সাবেক স্বামী আর্টিস্ট আতিকুর রহমানকে আটক করেছে। মঙ্গলবার সকাল ১০ টা দিকে জেলা শহরের সাধনার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও শিক্ষিকার সহকর্মীরা জানায়, শহরের শাহী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা পুলিশের এক এএসআই’র স্ত্রী থাকা অবস্থায় বাচ্চার আর্ট শিক্ষক থাকাকলে আতিকুর রহমানের সাথে পরিচয় হয় রুনার। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে পরকীয় সম্পর্ক হলে পুলিশ স্বামী বিষয়টি টের পেয়ে তাদেরকে রুনার বাসায় আটক করে একই বৈঠকে প্রথম স্বামীর সাথে রুনার বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এবং রুনা খানমের সাথে ২০২১ সালের মে মাসে আতিকুর রহমানের বিয়ে হয়। ১১ মাস সংসার শেষে ২০২২ সালের জুন মাসের ১৫ তারিখ আতিকুর রহমানের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
একটি সুত্র জানায়, রুনা ও আতিকের সাথে পরকীয় প্রেম চালকালে রুনাকে আতিক ১৮ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি লিখে দিবে এবং তার ভরন পোষনসহ সকল খরচ বহন করবে। কিন্তু বিয়ের পর রুনা দেখতে পায় সবই ছিল তার সাথে প্রতারণা। বরং রুনার কাছ থেকে প্রতিদিন হাত খচর বাবদ ২শ টাকা নিত আতিক। প্রতিশ্রুতি ও কাজের মিল না থাকায় তাদের সংসারে ভাংঙ্গন লাগে। বিয়ের ১১ মাস পর তাদের বিচ্ছেদ হয়। আতিকেরও একাধিক বিয়ে বিবাহ বর্হিভুত সম্পর্কের কথা বলছেন অনেকে।
মঙ্গলবার সকালে স্কুলে আসার পথে সাবেক স্বামী আতিক পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই শিক্ষিকাকে পথরোধ করে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা, পেট ও বুকে আঘাত করে। এতে রক্তাক্ত ও যখম হলে স্থানীয়রা ওই শিক্ষিকাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে ঘটনার পর ঘটনাস্থলে থাকা ট্রাফিক পুলিশের এক টিএসআইয়ের নিকট আত্মসমর্পণ করে। পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় রুনার সহকর্মী ও ঝালকাঠির শিক্ষক সমাজ সাবেক স্বামী আতিকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করেছেন। এ ব্যপারে থানায় আটক আতিক জানান, তার সাবেক স্ত্রী অন্য সম্পর্কে জাড়িয়ে যাওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়েই তাকে কুপিয়েছেন। এ ঘটনায় যে বিচার হয় তিনি মেনে নিবেন।
ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: নাসির উদ্দিন সরকার জানান, আতিক পুলিশের হাতে আত্মসমর্পণ করার পর তাকে থানায় আনা হয়। বিকেল পর্যন্ত কেহ অভিযোগ না করায় থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। শিক্ষিকার আত্মীয়স্বজন তাকে চিকিৎসা কাজে ব্যস্থা থাকায় অভিযোগ দিতে বিলম্ব হচ্ছে বলেও জানান ওসি।
ঝালকাঠি শাহী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার বেগম জানান, সকাল ৯টার দিকে বিদ্যালয়ে আসার সময় পথ রোধ করে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত হয়। আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার দাবী করছি।