রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার মিঃ মনোজ কুমার গত সোমবার বিকালে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পরিদর্শন পরবর্তীতে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ভারতে গমনাগমন এর সুবিধার্থে আমদানিকারকদের পাঁচ বছরের জন্য মাল্টিপল ভিসা প্রস্তুত সহজকরণ এবং বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন দিয়ে পর্যটন ভিসা খুলে দেওয়ার জন্য ভারতীয় সহকারি হাইকমিশন এর নিকট্ দাবী জানালে তিনি আগামী ১৫ এপ্রিল ২০২৩ খ্রিঃ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে ইমিগ্রেণশন চালু করার আশ্বাস দেন। এ সময় পঞ্চগড় জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান, মোঃ আবদুল হান্নান শেখ, ওসি, বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন, মোঃ নজরুল ইসলাম, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিঃ এর ইনচার্জ, মোঃ আবুল কালাম আজাদ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। তিনি স্থলবন্দরের সভা কক্ষে বাংলাবান্ধা আমদানি রপ্তানিকারক এসোসিয়েশন, স্থানীয় আমদানি ও রপ্তানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য যে, দেশের সর্ব উত্তরের সীমান্ত বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ও ভারতের সেভেন সিস্টার রাজ্যের প্রবেশ দ্বার ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন রুট দিয়ে ভারতে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশী আগ্রহী ভিসা প্রাপ্তিদের জন্য এ রুটটি দীর্ঘ কয়েক মাস বন্ধ ছিল। এরআগে গত ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ স্পেশাল সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (টি), ইনটিলিজেন্স ব্রাঞ্চ কর্তৃক স্বাক্ষরিত পত্রে ২৫ ফেব্রুয়ারি/২০২৩ খ্রিঃ থেকে নতুন ভিসায় আবেদনকারী যাত্রীরা রুট ব্যবহারের অনুমতি দেবার কথা জানানো হয়েছে। তখন বুড়িমারী, বেনাপোল, হিলি সহ অন্যান্য স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় ভিসা প্রদান করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে কোনো ঘোষণা ও কারণ প্রকাশ ছাড়াই বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারতের ফুলবাড়ি রুট দিয়ে প্রবেশের অনুমতি দিত না। ফলে আমদানি-রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ী, রোগীসহ নানা কারণে ভারত ভ্রমণকারীরা ভোগান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা সহ পঞ্চগড় জেলার বাসিন্দারা ভারতীয় ভিসার আবেদনে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি রুট চেয়ে থাকেন। কিন্তু আবেদনকারীকে ভিসা দেয়া হলেও বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতে প্রবেশের অনুমোতি দেওয়া হয়নি। তখন ভারতীয় ভিসায় এই চেকপোষ্ট উল্লেখ আছে-এমন ভ্রমণকারীরাই কেবল যাতায়াত করতে পারত।
পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট পার হলেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম শহর শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ির হয়ে নেপাল, ভুটান, ভারতের সিকিম,দাজিলিংসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটের যোগাযোগ বেশ সহজ। অন্য যে কোনো স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোট দিয়ে এসব এলাকায় যাতায়াত ব্যয়বহুল এবং সময় ও বেশি লাগে। এজন্য এই স্থলবন্দর চেকপোষ্ট অল্প দিনেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
অতিসম্প্রতি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট ঘুরে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারতে মধ্যে যাতা-য়াতকারী নেই বললেই চলে। উভয় দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কর্যক্রম স্বাভাবিক থাকলেও বন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতে দেখা যায়নি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ স্পেশাল সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (টি), ইনটিলিজেন্স ব্রাঞ্চ অনুমতি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর রুট ও ভারতের ফুলবাড়ি বন্দর দিয়ে যাবতীয় সমস্যার অবসান ঘটিয়ে নতুন করে চালুর অনুমতি দেয়ায় ভুক্তভোগী জনসাধারণ, ভারত-নেপাল ও চিনে অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রী রাজনৈতিক ও সুশিল সমাজের নেতৃবৃন্দ সহ ব্যবসায়ীরা ভারত সরকারের এই উদ্যোগেকে স্বাগত জানিয়েছে।
বাংলাবান্ধা আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি আবদুল লতিফ তারিন বলেন, বাংলাবান্ধা রুট দিয়ে ইমিগ্রেশন চালুর দাবিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করা হচ্ছে। এরআগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি/২০২৩ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ স্পেশাল সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (টি), ইনটিলিজেন্স ব্রাঞ্চ অনুমতি প্রদান করেন। গত ৩ এপ্রিল/২০২৩ রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার মিঃ মনোজ কুমার পরির্দশন করে আগামী ১৫ এপ্রিল/২০২৩ তারিখের মধ্যে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর রুটটি খুলে দেবার আশ্বাস প্রদান করায় বাংলাদেশ থেকে ভিসা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের কোন সমস্যার অবসান হলো।