খুলনার পাইকগাছায় গ্রীষ্মের শুরুতে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট নিরসনে সরকারি এবং বেসরকারিভাবে নানা উদ্যোগ নিলেও এখনো বেশীরভাগ মানুষ সুপেয় পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। বঞ্চিত পরিবারের নারীদের প্রতিদিন পানির জন্য সংগ্রাম করতে হয়। কোথাও কোথাও সপ্তাহে ১দিন মেলে সুপেয় পানি। উল্লেখ্য, ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে পাইকগাছা উপজেলা। তার মধ্যে কপিলমুনি, লতা, দেলুটি, সোলাদানা, লস্কর, রাড়-লী ও গড়ইখালী ইউনিয়নে সুয়েপ পানির তীব্র সংকট। প্রতিটি এলাকায় রয়েছে সুপেয় পানির সংকট। তবে সুন্দরবনের কোল ঘেষে কপোতাক্ষ, শিবসা ও মিনহাজ অববাহিকায় অবস্থিত উপজেলা। চারিপাশে পানির ছড়াছড়ি থাকলেও সুপেয় পানির বড়ই অভাব। নদ-নদীর পানি যেমন লবণ, ভূগর্বস্থ পানিও তেমনি লবণ ও আয়রণ যুক্ত। ফলে এলাকার মানুষের খাওয়ার পানির অন্যতম উৎস হচ্ছে পুকুর ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ। ইতোমধ্যে সরকারি এবং বেসরকারিভাবে ট্যাংকি বিতরণ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা যথেষ্ঠ না হওয়ায় এখনো বেশীরভাগ মানুষ সুপেয় পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। কোথাও কোথাও কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেটে গিয়ে সুয়েপ পানি সংগ্রহ করতে হয়। কোথাও আবার নছিমন-করিমন ও ইঞ্জিন ভ্যানের মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করা হয়। গড়ইখালী ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই ফকির আলমশাহ নামে একটি পুকুর রয়েছে। বেসরকারি একটি সংস্থা পুকুরের পানি ফিল্টার করে পাইপের মাধ্যমে গড়ইখালী ও আশপাশ এলাকায় সরবরাহ করে থাকে। এলাকার বিভিন্ন স্থানে ১২টি পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। এসব এক একটি পয়েন্টে সপ্তাহে একদিন পানি দেওয়া হয়। যেদিন পানি দেওয়া হয় সেদিন পানি নেওয়ার জন্য অনেকটাই যুদ্ধ করতে হয় এলাকার নারীদের। গৃহবধূ রহিমা বেগম জানান, একদিন পানি নিয়ে ১ সপ্তাহ চলে না। অন্যান্য উৎসের মাধ্যমে বাকি ৬ দিনের পানি সংগ্রহ করতে হয়। এ ছাড়া পানি নিতে গিয়েও ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আবদুস সালাম কেরু জানান, সরকারি এবং বেসরকারিভাবে অনেকগুলো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে পানির ট্যাংক বিতরণ ও বিভিন্ন স্থানে পানির পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু ইউনিয়নটি লবণাক্ত এলাকায় হওয়ায় এখানো ইউনিয়নের বেশীরভাগ মানুষকে সুপেয় পানির সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার সর্বত্র বাস্তব চিত্র এমনই।