গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় পিতা মারা যাওয়ার প্রায় ৩মাস পর সৎ মাসহ ৫জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন পুত্র। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলাসূত্রে জানাগেছে, উপজেলার শুয়াগ্রাম ইউনিয়নের কালারবাড়ি গ্রামের এলেন উদ্দিন খান (৯৫) গত জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে এলেন উদ্দিন খান তার দ্বিতীয় পক্ষের ২পুত্র ইব্রাহিম খান (২৫) ও ই¯্রাফিল খান (২৩) এর নামে ২একর ৪৫শতাংশ জমি লিখে দেয়। এই জমি লিখে দেওয়ার পরে এলেন উদ্দিন খানের প্রথম পক্ষের ৫সন্তানের সাথে দ্বিতীয় পক্ষের ২সন্তানের বিরোধ দেখা দেয়।
এই বিরোধের একপর্যায়ে এলেন উদ্দিন খানের প্রথম পক্ষের মেঝপুত্র মোঃ শামছুদ্দিন খান (৫৯) বাদী হয়ে গত ২এপ্রিল গোপালগঞ্জের বিজ্ঞ কোটালীপাড়া আমলী আদালতে তার সৎ মা ফিরোজা বেগম ও ২ সৎ ভাই ইব্রাহিম খান এবং ই¯্রাফিল খানসহ ৫জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কোটালীপাড়া থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী মোঃ শামছুদ্দিন খান।
তিনি বলেন, আমার সৎ মায়ের পরামর্শে ২ সৎ ভাই আমার বৃদ্ধ পিতাকে ভূল বুঝাইয়া গোপনে ২একর ৪৫শতাংশ জমি লিখে নেয়। এরপর তারা আমার পিতার নামে থাকা অবশিষ্ট জমি লিখে নিতে চাইলে আমার পিতা রাজি হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সৎ মা ও সৎ ২ ভাই মিলে আমার পিতাকে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। এই কাজে এলাকার ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন খান ও জনৈক ফিরোজ সিকদার সহযোগিতা করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। পুলিশের তদন্তে সঠিক ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে আমাদের বিশ^াস।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এলেন উদ্দিন খানের দ্বিতীয় পক্ষের ছোট পুত্র ই¯্রাফিল খান বলেন, আমার পিতা এলেন উদ্দিন খান দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন। এ সময় তার দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানেরা কোন প্রকার তার সেবাযতœ করেনি। তিনি আমাদের সেবাযতেœ খুশি হয়ে আমাদের ২ভাইয়ের নামে ২একর ৪৫শতাংশ জমি লিখে দিয়েছেন। এখন আমাদের সৎ ভাইয়েরা এই জমি তাদেরকে লিখে দিতে বলেন। আমরা লিখে না দেওয়ায় তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। তারা আমাদেরকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে আমরা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন খান বলেন, এলেন উদ্দিন খানের মৃত্যুর পর তার ২ পক্ষের সন্তানদের মাঝে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। আমি এলাকার লোকজন নিয়ে একাধিক বার এই বিরোধ মিমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোন পক্ষই স্থানীয় সালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। ২ পক্ষই আদালতে মামলা করেছে। এরই মাঝে ১ পক্ষ আমাকে আসামি করেছে। আমি এই জমি লিখে দেওয়ার কথা শুনেছি। তবে আমি জমি লিখে দেওয়ার সময় ছিলাম না।
কোটালীপাড়া থানার এসআই মাসুম বলেন, মোঃ শামছুদ্দিন খানের দায়েরকৃত মামলার কপিটি হাতে পেয়ে তদন্ত শুরু করেছি। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হবে।