প্রায়ই ভয়াবহ ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেকে। বদলাচ্ছে প্রতারণার ধরণ। ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া ও মোবাইল ফোনে ওৎপেতে থাকা প্রতারকরা টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিঃস্ব করছে মানুষকে। এমন সব প্রতারণার ঘটনা ঘটছে -অনেকে সামাজিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে চেপে যাচ্ছেন। ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন বেশ নিরাপদ। প্রযুক্তির সহায়তায় এই লেনদেনকে আরও সহজ ও গ্রাহকবান্ধব করতে বেশ কয়েকটি ব্যাংক ডিজিটাল লেনদেন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গ্রাহকরা তাদের সুবিধামতো স্মার্টফোন কিংবা সাধারণ ফোন দিয়েও লেনদেন করতে পারছে সহজেই। তবে ঘরে বসে অর্থ লেনদেন করতে পারলেও এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাও কম নয়। একশ্রেণির প্রতারক সবসময় ওত পেতে থাকে প্রতারণা করার জন্য। পৃথিবীতে মানুষের কল্যাণের জন্য যত প্রযুক্তিই আবিষ্কার হোক না কেনো, তার অপব্যবহারের মাধ্যমে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে ফায়দা হাসিলের লোকের সংখ্যাও কম নয়। ভার্চুয়াল প্রতারণার শিকার হওয়ার পরও প্রায় ৭০ ভাগ ভুক্তভোগীই মামলা করতে চান না। ভয়ঙ্কর সব প্রতারণার অভিযোগ থাকলেও নেই প্রতিকার। মামলার পর গ্রেপ্তার হলেও দ্রুত জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠছে চক্রের সদস্যরা। আগে তাদের প্রতারণার ধরন ছিল একরকম, প্রযুক্তির উন্নতির পর তাদের প্রতারণার ধরনে এসেছে পরিবর্তন। প্রেমের ফাঁদ পেতে ফেসবুকে বেশি প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি ফেসবুকে ই-কমার্স পেজ খুলে বিশাল ছাড়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভোক্তার কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে পণ্য না পাঠানোর ঘটনাও ঘটছে। তাছাড়া নিত্যদিনই জমি লিজ, প্লট বিক্রি, চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা, এমএলএস ব্যবসার আড়ালে প্রতারণা, পে-অর্ডার প্রতারণা, অনলাইন প্রতারণাসহ নানা রকম প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সচেতনতাই হচ্ছে ওই প্রতারকচক্রের হাত থেকে রক্ষা একমাত্র উপায়। মনে রাখতে হবে, প্রতারিত হয়ে গেলে প্রতারকদের কাছ থেকে টাকা ফেরত পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রতারকদের দ্বারা প্রতারিত হওয়ার আগেই সচেতন হতে হবে। কাউকে টাকা পাঠানোর সময় নম্বর সঠিক হয়েছে কিনা তা একাধিকবার দেখে নিতে হবে। মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান বিকাশের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি কখনো কোনো গ্রাহকের পিনকোড, পাসওয়ার্ড জানতে চায় না। এরপরও মানুষ প্রতারকের ফাঁদে পা দেয়। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতনতার বিকল্প নেই। কাউকে নম্বর দেওয়ার সময় সঠিক নম্বর দেওয়া হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, যখন কেউ ফোন করে পিন নম্বর চায় কিংবা ‘টাকা চলে এসেছে, ফেরত দিন’ বলে, তখন সঙ্গে সঙ্গেই ফোন কেটে দিয়ে নিজের ব্যালেন্স চেক করে এবং যারা এ বিষয়ে ভালো বোঝে তাদের পরামর্শ নিতে হবে। তাহলেই এই ফাঁদ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।