টেকসই উন্নয়ন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত বরিশাল নগরীকে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরিত করতে বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াত সাদিক আব্দুল্লাহর ওপরই আস্থা রেখেছেন নগরবাসী।
আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে পূর্ণরায় নগরবাসীর সেবক হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভয়াল কাল রাতে গুলিবিদ্ধ মায়ের কোলে থাকা ছোট্ট শিশু সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকেই পুর্ণরায় মেয়র হিসেবে দেখতে চান বরিশাল সিটির সাধারণ ভোটাররা। তাকে (সাদিক) নিয়েই স্মার্ট বরিশাল নগরী গড়ার স্বপ্ন দেখছেন সর্বস্তরের নগরবাসী।
সূত্রমতে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর থেকেই নগরীতে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। বিসিসি’র ৩০টি ওয়ার্ড ও মহল্লায় চলছে মেয়র হিসেবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা। এরমধ্যে এপর্যন্ত সরকার দলের যে কয়েকজন সম্ভ্রাব্য প্রার্থীর নাম লোকমুখে চাউর হয়েছে তা নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষন।
নগরীর সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ সংলগ্ন চৌমাথা এলাকার বাসিন্দা নাজমুল সানী বলেন, এপর্যন্ত মেয়র প্রার্থী হিসেবে যে কয়েকজন সম্ভ্রাব্য প্রার্থীর নাম মাঠে ছড়িয়েছে, তারমধ্যে বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অবস্থান সবার উপরে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তার (সাদিক) মেয়াদে যতোটুকু উন্নয়নই হয়েছে তা পুরোটাই টেকসই উন্নয়ন হয়েছে। প্রতিটি সড়ক উন্নয়নে ঠিকাদারদের কাছ থেকে পাঁচবছরের গ্যারান্টি রাখা হয়েছে। অপর ভোটার মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, বর্তমান মেয়রের সময়ে আর যাই হোক বিভাগীয় শহর বরিশাল নগরী সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত রয়েছে। তানভির আহমেদ অভি নামের অপর ভোটার বলেন, বরিশাল নগরীকে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরিত করতে বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াত সাদিক আব্দুল্লাহর ওপরই তাদের আস্থা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ২০০২ সালে বরিশাল পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর তৎকালীন চারদলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান সরোয়ার মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি তার মেয়াদকালে নগরীতে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন করতে পারেননি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শওকত হোসেন হিরণ মেয়র নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ¦ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সহযোগিতা ও দিকনির্দেশণায় বরিশাল সিটিকে আধুনিক ডিজিটাল জনবান্ধন নগরীতে রূপান্তর করতে সক্ষম হন। যা আজও নগরবাসী শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছেন।
পরবর্তীতে ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আহসান হাবীব কামাল মেয়র নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নের উল্টো পথে ধাপিত করেন। নগরবাসীর দাবি, সারাদেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে, ঠিক তখনই তৎকালীন মেয়র আহসান হাবীব কামার বরিশাল নগরীকে একটি ভঙ্গুর ও জনদুর্ভোগের নগরীতে পরিণত করেন। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে ঋণের ভারে জর্জরিত করে একজন ব্যর্থ মেয়র হিসেবে পরিচিত হন। তার (কামাল) সময়কার কোটি টাকার বকেয়া বিদ্যুত বিলের বোঝা আজও বইতে হচ্ছে বর্তমান সিটি কর্পোরেশনকে।
সূত্রমতে, ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী লীগের একমাত্র অভিভাবক বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে আলহাজ¦ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি’র জেষ্ঠপুত্র মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াত সাদিক আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়র নির্বাচিত হয়েই সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ দেনাগ্রস্থ বরিশাল সিটিকে টেনে তুলেন। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বরিশাল নগরীতে তিনি (সাদিক) যতোটুকু উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছেন তা সুদীর্ঘ পরিকল্পিত এবং নগরায়নে টেকসই বলে মনে করেন নগরবাসী। এছাড়াও তিনি (সাদিক) দীর্ঘদিনের বিভক্ত নগর আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের একত্র করণের মাধ্যমে বরিশালে একটি শক্ত ভীত স্থাপন করেছেন।
নগরীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আফসার উদ্দিন মৃধা বলেন, করোনাকালীন সময়ে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ একজন সম্মুখ করোনাযোদ্ধা হিসেবে সার্বক্ষণিক খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে নগরবাসীর পাশে ছিলেন। তিনি নগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন ও সংকটে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে আস্থা অর্জন করেছেন। এমনকি সিলেটের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের ২০ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দিয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
নগরীর বিসিকের নারী উদ্যোক্তা জিতু আক্তার নাবিলা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪১ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণের জন্য স্মার্ট বরিশাল সিটি রূপান্তরে বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বিকল্প নেই। আসন্ন সিটি নির্বাচনেও নগরবাসী তাকেই মেয়র হিসেবে পেতে চায়।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক পরিবারের যোগ্য উত্তরসুরী সেরনিয়াত সাদিক আব্দুল্লাহ আগামীর উন্নত বরিশাল গড়ার প্রত্যয়ে সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব নিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা, সাংস্কৃতি, ক্রীড়া উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালনের মাধ্যমে নগরবাসীর হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডকে ঢেলে সাজিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সু-সংগঠিত করে একটি মডেল ইউনিট গঠণের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ তার পিতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর পদাঙ্ক অনুসরণ করে উন্নয়ন ও রাজনৈতিক সহাবস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে নগরবাসীর আস্থা অর্জন করেছেন। তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারি এবং বৈশ্বিক সংকটের বাঁধা পেরিয়ে আধুনিক বরিশাল সিটি গড়ার অসমাপ্ত কাজকে সম্পূর্ণ করতে পূর্ণরায় সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে মেয়র হিসেবে পেতে চায় নগরবাসী। তিনি বলেন, বরিশাল সিটির উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ ইতোমধ্যে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। আওয়ামী লীগের ভিশনের অংশ স্মার্ট বরিশাল গঠনে তাই সকলেই সাদিক আব্দুল্লাহতেই আস্থা রেখেছেন।