মাঠে মাঠে এখন সবুজের সমারোহ। থোর থেকে ধান বের হওয়া শুরু হয়েছে। আগাম জাতের ধান গাছ থেকে ফুলে বের হওয়া প্রায় শেষ। কৃষকের বোরোর ক্ষেত যেন হাসছে। এ সময়টাই বোরোর ক্ষেতের প্রতি কৃষকদের অধিক সচেতনতা ও যত্নশীল হওয়ার সময়। মৌসুমের এ সময়ে ধান ক্ষেত ছত্রাকজনিত ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভব্য সময়। এ রোগে আক্রান্ত হলে ধান গাছের শীষ শুকে মরে যাওয়ায় ধানে অধিক চিটা হয়। যার কারণে ফলন কমে যেতে পারে শতভাগ পর্যন্ত। তাই সময় মত সঠিক ব্যবস্থা গ্রহন করতে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কৃষি বিভাগ কর্তৃক কৃষকদের মাঝে সচেতনতা মুলক পরামর্শ সহ নানা কার্যক্রম গহন করা হয়েছে।
উপজেলার পশ্চিম বাটি গ্রামের কৃষক ফারুকুল ইসলাম ৮ বিঘা জমিতে এবার বোরো লাগিয়েছেন। আবাদ ভালো হওয়ায় ভালো ফলনের আশা তার। একই ভাবে আবাদ ভাল হওয়ায় ভালো ফলনের আশা করছেন, ওই গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান। তার তিন বিঘা জমিতে ধান বের হতে শুরু হয়েছে। আবাদ ভালো হওয়ায় ওই জমি থেকে ৫০-৫৫ মন ধান পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন ওই কৃষক। দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আবদুস সামাদ জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার তাদের বোরো আবাদের ফলন ভালো হবে। সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বোনারপাড়া, কচুয়া, মুক্তিনগর, পদুমশহর, বাটি ও দুর্গাপুর এলাকায় বোরোর বিভিন্ন জাতের ধান গাছ থেকে শীষ বের হওয়া শুরু করেছে। এবার আবাদের চেহারা ভালো হওয়ায় বেশ খুশি কৃষকরা। আর তিন থেকে চার সপ্তাহ পরেই পুরোদমে বোরো কাটা মাড়াই শুরু হবে বলে জানালেন, বোনারপাড়ার কৃষক রফিকুল ইসলাম। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্র জানায়, এ সময় ধান গাছ ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হলে জমিতে যেকোন ভাবে পানি ধরে রাখতে হবে। ধানের পাতায় ব্লাস্ট দেখা দিলে জমিতে বিঘা প্রতি অতিরিক্ত ৫ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে এবং ইউরিয়া সার প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে। এছাড়াও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, দিনে গরম রাতে ঠান্ডা ও ঝড়ো আবহাওয়া বিরাজ করলে ধানের জমি রোগাক্রান্ত হোক বা না হোক কৃষি বিভাগের পরামর্শে ছত্রাক নাশক স্প্রে করে নিতে হবে। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার ১৪ হাজার ৫শ’ ৩ হেক্টর জমিতে ইরিবোরোর লক্ষ্যমাত্র ধার্য করা হয়েছে। আবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ২শ’ ২০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান জানান, এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় ও কৃষকদের সময় মত সঠিক পরামর্শ প্রদান করায় বোরোর আবাদ ভালো হয়েছে। ছত্রাক জনিত ব্লাস্ট রোগ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ধান গাছ এ রোগে আক্রান্ত হবার আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে। থাকলে ফলনও ভালো হওয়ার আশা করা রয়েছে।