ইতোমধ্যেই খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা আমের বানিজ্যিক রাজধানী হিসেবে দেশ-বিদেশে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয় দিঘলিয়ার আমের কদর বিদেশের মাটিতেও লক্ষ্য করা গেছে। প্রতি বছর এ অঞ্চল থেকে আম রপ্তানি হয় বিভিন্ন দেশে। চলতি মৌসুমে উপজেলার আম বাগানগুলোর গাছে গাছে দেখা যাচ্ছে আমের গুটি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও আমের বাম্পার ফলনের আগাম স্বপ্ন দেখছে আম চাষীগণ। গত মৌসুমে আমের বাজার দর ভালো ছিলো। যার ফলে চলতি বছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আম চাষ বেড়েছে। স্থানীয় চাষীরা ঝুঁকে পড়ছেন আমবাগান তৈরীতে। পাশাপাশি গড়ে উঠেছে নানা দেশী-বিদেশী জাতের আমের কলম চারা সরবরাহের জন্য ডজন ডজন নার্সারী। যেখান থেকে উন্নত নানা জাতের আমের কলম চারা সারা বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। এলাকার আমবাগান গুলো ঘুরে দেখা যায়, বর্তমান সময়ে বিভিন্ন বাগানের আমগাছ গুলোতে জ¦লজ¦ল করছে আমের গুটি। এবছরের প্রথম দিকে আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলেও পরবর্তী সময়ে আবহাওয়া ভালো হওয়ায় আমের বর্তমান অবস্থা সন্তোষজনক বলছেন আমচাষীরা। বর্তমানে এই উপজেলায় বিভিন্ন জাতের আম চাষ হচ্ছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, আ¤্রপালি, বারি-৪, আশ্বিনা, হিমসাগর, লখনা, খিরসাপাত, কাটিমন, ফজলী, বারোমাসীসহ নানান জাতের আম। তবে তুলনামূলক ভাবে আ¤্রপালি চাষহচ্ছে শতকরা ৭৬শতাংশ। আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলো এবারেও আমের বাম্পার ফলন হবে বলে ধারণা করছেন চাষীরা। বর্তমানে আমের তেমন রোগবালাই নেই। তবে উকুন পোকার কিছুটা আক্রমণ রয়েছে। যার কারণে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ কিশোর আহমেদ।
চলতি বছরে এই উপজেলায় ৮০হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। যা খুলনা জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে খুবই কম। হেক্টর প্রতি ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮-১২ মেট্রিক টন বলেও জানান এই কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে উপজেলার একাধিক আমচাষীর সাথে কথা হলে তারা জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সব বাগান গুলোতে পূর্ণাঙ্গ আম দেখা যাবে। আমের জাতে ক্ষতি না হয় বা ঝরে না যায় সেজন্য পূর্ব অভিজ্ঞতা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী বালাইনাশক ব্যবহার করছেন এলাকার আমচাষীরা। তবে এলাকায় আম চাষের উপর স্থানীয় কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তাদের তেমন কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই। যারাই আম বাগান করছেন স্বোদ্যোগে। সরকারি প ষ্ঠপোষকতা পেলে দিঘলিয়ায় আম চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে কৃষকেরা মনে করেন। কৃষকেরা আরো জানান, এ উপজেলায় আম চাষে সফলতার স্বীকৃতি স্বরূপ কয়েক জন আম চাষি জাতীয়ভাবে পদকও পেয়েছেন। আগামীর সম্ভাবনার স্বপ্ন নিয়ে বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যাস্ত সময় পার করছেন উপজেলার আমচাষীগণ। কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছরেও আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন এলাকার আমচাষীরা।