নলছিটি পৌর এলাকার নান্দিকাঠিতে ক্রয়কৃত জমিতে আদালতের আদেশ ও ডিক্রি পেয়েও একেরপর এক মামলায় হয়রাণি করছে প্রতিপক্ষরা। এমনকি কোন ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করতে গেলে বাধা ও হামলার স্বীকার হতে হয় প্রকৃত মালিকদের। মামলার মোকাবেলা করতে আদালতের বারান্দায় দৌড়াতে দৌড়াতে কয়েকলাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। পুলিশের এসআই রমিজ হাওলাদারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে বছরের পর বছর হয়রাণি করে আসছে। ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে রোববার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগীরা এ অভিযোগ করেছেন। এতে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন মো. রায়হান হাওলাদার, সাথে উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা জোমাদ্দার।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নলছিটির নান্দিকাঠি মৌজার জেএল নং-৪৪, এসএ খতিয়ান নং-৫৪৬, দাগ নং-১৩৮ ও ১৩৯, জমির পরিমাণ ৪২ শতাংশ এবং ৫৪৩ নং খতিয়ানের ১৬ শতাংশ মোট ৫৮ শতাংশ জমি ২০০৮ ও ২০১১ সালে ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে বর্তমানে ভোগ দখলে বিদ্যমান। এ জমিতে লোলুপ দৃষ্টি পড়ায় অবৈধ দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত মো. খালেক হাওলাদার, মো. বারেক হাওলাদার, মো. ছালেক হাওলাদার, মো. রমিজ হাওলাদার ও তার স্ত্রী মোসা. মুক্তা বেগম। এরই ধারাবাহিকতায় একে একে ৯টি মামলা করে পরাজিত হলেও জমির মালিকদেরকে হয়রাণি করা ক্ষ্যান্ত হয়নি। মামলার পর মামলা দিয়ে দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে (২০১৬সাল থেকে) হয়রাণি করে লাখ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসএ রেকর্ডিয় মালিক আছরউদ্দিন এর মৃত্যুতে ওয়ারিশ সূত্রে দাবী করে নলছিটির সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা (নং-৯১/৯৩) দায়ের করেন। ওই মামলার রায় ও ডিক্রিমূলে প্রাপ্ত হয়ে সত্ত্ব মালিকানা হওয়ার পরেও আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জজ আদালতে রিভিশন মোকদ্দমা (০৬/২০১৬) দায়ের করেন আবদুল খালেক গং। এমামলার রায় ও ডিক্রিতে দোতরফা সূত্রে আদালত রিভিশন না মঞ্জুর করেন। রিভিশন না মঞ্জুরের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন মামলা (নং-১৫১২) দায়ের করলে উচ্চ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নি¤œ আদালতের ৯১/৯৩ নং মামলার আদেশ ও ডিক্রি বহাল রাখেন। উচ্চ আদালত কর্তৃক আদেশকৃত নি¤œ আদালতের আদেশ বহাল রাখার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট সুপ্রিম কোর্ট আদালতে সিভিল রিভিশন মামলা (নং-৩৭৫) দায়ের করে। ওই মামলার শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত তা খারিজ করে নি¤œ আদালতের আদেশ বহাল রাখেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ডিভিশনে লীভটু আপীল মামলা (নং-২১) করলে তাও খারিজ করে পূর্বে আদেশ বহাল রাখেন। পরবর্তিতে ডিক্রিপ্রাপ্ত মালিক মো. রহম আলী হাওলাদার গংদের কাছ থেকে ১০-১১-২০১৮ সালে ১৮৬৭ নং সাফকবলা দলিলমূলে ক্রয়সূত্রে মালিক থেকে নলছিটি সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর আদালতে ৮৫(। ) ২২২-২৩ নাম জারিসহ জমা খারিজ কেসে ১৩০০ নং খতিয়ান খুলে নিয়মিত খাজনাদি পরিশোধ করতেছি। ওই জমিতে দু’টি কাঠ ও টিনের ঘরে ৬৬২ এবং ১০৩ হোল্ডিং নম্বরে ভোগ দখন ও পাশের জমি ফাঁকা রয়েছে। ওই জমিতে বসবাস করা সত্বেও কোন ধরনের উন্নয়ন কাজ করতে গেলেই পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মো. রমিজ হাওলাদার এবং তার স্ত্রী মোসা. মুক্তা বেগম অতর্কিত হামলা চালায়। নিকটাত্মীয় মো. খালেক হাওলাদার, মো. বারেক হাওলাদার, মো. ছালেক হাওলাদারকে নিয়ে নতুন অপকৌশল শুরু করে। জমিতে পাকা ভবন করার জন্য ইট, রড ও সিমেন্টসহ ২লক্ষাধিক টাকার মালামাল রাখলে গত ২০ ও ২১ মার্চ উল্লিখিত প্রতিপক্ষরা নিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে থানা কর্তৃপক্ষ উভয় পক্ষকে ডেকে শালিশীর মাধ্যমে সমাধানের প্রতিশ্রুতির স্বাক্ষর নিয়ে তারিখ নির্ধারণ করে। পরের দিন থানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জোর করে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগে এক আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ দেয় আবদুল বারেক হাওলাদার। পুনরায় হয়রাণী করতে নলছিটির সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা (নং- ১০/২৩) দায়ের করে খালেক গং। মামলা, হামলা ও হয়রানিতে আমরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি। এধরনের অমানবিক হয়রানি থেকে মুক্তির প্রত্যাশা করেন তারা।