আপাতত হঠাৎ সৃষ্টি হওয়া কালবৈশাখী ছাড়া গরম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। আগামী কিছুদিন স্বাভাবিকভাবে বৃষ্টি হওয়ার কোনো পূর্বাভাস দিতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা। গত শনিবার দেশের তিন বিভাগ ও ১১ জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। গত রোববারও তা অব্যাহত ছিল। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আপাতত কয়েকদিন বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে কালবৈশাখী হলে যে কোনো সময় বৃষ্টি হতে পারে। সেটা যখন সেল তৈরি হয় এবং যখন-তখন ঝড়-বৃষ্টি হয়। তখন গরম কমে যায়। সেটি ভিন্ন বিষয়। কিন্তু পূর্বাভাসে স্বাভাবিক কোনো বৃষ্টি নেই। কালবৈশাখীরও কোনো পূর্বাভাস নেই। কখনো কখনো বিকেলের দিকে কালবৈশাখী হয়ে থাকে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। গত রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। গত রোববার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বদলগাছীতে। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত শনিবার ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে চুয়াডাঙ্গায় টানা তাপপ্রবাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এতে মানুষ ও যানবাহন চলাচল অনেকটা কমে গেছে। বাজারে ঈদ কেনাকাটায় ছেদ পড়েছে। তীব্র গরমে রোজাদারদের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। গত কয়েকদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬-৩৮.৫ ডিগ্রিতে থাকছে। গত রোববারও সকালে ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, গত শনিবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলষ্টিয়াস ছিল। এ ছাড়া শুক্রবার ৩৮ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার ৩৭.৫ ডিগ্রি, বুধবার ৩৭ ডিগ্রি, মঙ্গলবার ৩৭ ডিগ্রি, সোমবার ৩৫.৫ ডিগ্রি ও গত রোববার ৩৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। বেসরকারি চাকরিজীবী শিউলি শারমীন বলেন, প্রচণ্ড গরমে রোজা রাখা আর অফিস করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে ভালো হতো। রিকশাচালক লিয়াকত মিয়া বলেন, রাস্তায় বের হলে মাথার ওপর সূর্য থাকছে। একই সঙ্গে গরমে রিকশা চালানো যাচ্ছে। আর যাত্রীও তেমনটা নেই। ব্যাংকার আবির হোসেন রাজু বলেন, ভাবছিলাম মাঝ রোজার মধ্যে বাড়ির জন্য ঈদের কেনাকাটা করে রাখবো, কিন্তু এত রোদ আর তাপমাত্রা মার্কেটে ঘোরাঘুরি করার উপায় নেই। চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, গত রোববার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এ ছাড়া গত সাত দিনও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হয়েছে। দু-তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রা আরও বাড়বে পাবে।