রাজশাহীর বাগমারার হাসনিপুরের সেই বিবাদমান জমি পুর্লিশের সহযোগিতায় দখলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ উপস্থিত থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এক পক্ষকে জমিটি দখলে নিতে সহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই বিষয়ে অভিযোগ করা হয়। তবে পুলিশের দাবি, পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিল।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জামালপুরের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক তোজাম্মেল হকের জমি তোরা ফাউন্ডেশন নামের এক সুদকারবারি প্রতিষ্ঠান কিনে নেয়। তবে জমিটি ভূয়া মালিকের কাছ থেকে কিনে নিয়ে রাতারাতি দখলের চেষ্টা করে তোড়া ফাউন্ডেশন। এ সময় টের পেয়ে প্রকৃত মালিক বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দেওয়া হয়। পুলিশ সাজানো ওই মামলায় অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। তিনিসহ মামলার সব আসামিরা বর্তমানে জামিনে আছেন।
এদিকে তোরা ফাউন্ডেশনের পরিচালক কামরুল ইসলাম জমিটি ভাড়াটে লোকজন দিয়ে একাধিকবার দখলের চেষ্টা করেন। তবে স্থানীয়দের বাধার কারণে তিনি তা পারেননি। এদিকে সোমবার সকালে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পুলিশের সহযোগিতায় বিবাদমান ওই জমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করা হয় বলে জানান জমিটির প্রকৃত মালিক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক তোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, পুলিশ সহ ভাড়াটে লোকজন নিয়ে তার পৈত্রিক জমিটি দখল করা হয়েছে। এ সময় জমির প্রকৃত মালিক ও তাঁর আত্মীয় স্বজনেরা বাধা দিতে আসলে পুলিশ তাদের ধাওয়া এবং গুরুতর মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়। এ সময় এক তরুনকে আটক করে। পরে পুলিশ পাহারা দিয়ে বিবাদমান জমিতে ঘর নির্মাণে সহযোগিতা করেন। দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশ সেখানে অবস্থান করে।
এনিয়ে সোমবার সকালে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় গনিপুরের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জু অভিযোগ করেন, পুলিশের সহযোগিতায় জমিটি দখল করা হয়েছে। এনিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য অনুরোধ করেন।
এছাড়াও তোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তৌহিদুর রহমানের নেতৃত্বে মোটা উৎকোচের বিনিময়ে একদল পুলিশ উপস্থিত থেকে জমি দখল করে দেন। তাঁরা পুলিশের কাছে নিজেদের অভিযোগ নিয়ে আসলে উল্টো নাশকতা মামলার আসামি করার ভয়ে দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরিদর্শক তৌহিদুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি। তবে থানার ওসি আমিনুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিল। তবে পুলিশের সহযোগিতায় জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয়। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তোরা ফাউন্ডেশনের পরিচালক কামরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবী করে বলেন, আমার জমি ক্রয় সঠিক। জমিটি খারিজ করে খাজনা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অনেক আগে জমি কেনা। এতদিন তারা কোথায় ছিল। সর্বশেষ তিনি এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকে নিষেধ করেন।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য রাজশাহী পুলিশ সুপারের সঙ্গে বাগমারা প্রেসক্লাব থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ফোন না ধরার কারণে কথা বলা সম্ভব হয়নি।