আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটারদের পছন্দের প্রার্থীতায় যে কারণে এগিয়ে রয়েছে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ। বিভিন্ন কারণে তিনি এগিয়ে রয়েছেন এমটাই মনে করছেন রাজনীতিবিদ, সচেতন জনসাধারণ এবং ব্যবসায়ী মহল। একটি চক্র বার
বার তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে ধাবিয়ে রাখার চেষ্টা করে ব্যর্থ প্রায়।
নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে চতুর্মূখী তদবির চলছে। তবে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণেকেই প্রার্থী হিসেবে পেতে চাইছে।
প্রথমত: গাজীপুরের অবিসংবাদিত নেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার পরিবারের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে তার উপর। তাছাড়া ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে তার ভালো সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিরণ
একজন পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক কর্মী, সংগঠক, মেধাবী ও যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি হওয়ায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মত তাঁর উপর ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বটি অর্পণ করেন। তিনি আগামী সিটি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলে নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারবেন বিধায় এগিয়ে রয়েছেন।
গোয়েন্দা সুত্রে জানা যায়, এই সিটিতে একদিকে জাহাঙ্গীর আলম বিতর্কিত অপরদিকে আজমত
উল্লা খানকে আবার মনোনয়ন দেয়া হলে মেয়র পদটি অন্যের দখলে চলে সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ আজমত উল্লা খানের নেই কর্মী বাহিনী নেই সাংগঠনিক তৎপড়তা নেই তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে সখ্যতা। তাই এই সিটিতে কিরণের বিকল্প আর কেউ নেই বলে মনে করছেন নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা।
গত সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলম দলীয় মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর জাতির পিতাকে নিয়ে কটূক্তি করার অপরাধে দল থেকে বহিস্কার হন (বর্তমানে ক্ষমাপ্রাপ্ত)। পরবর্তি সময়ে মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর সাময়িক বরখাস্ত হন। এরপর ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে কিরণের প্রধান কাজই ছিলো দলের ভাবমুর্তি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে গাজীপুর সিটি মেয়র পদের মর্যাদা পুনরুদ্ধার। সম্ভবত তিনি কাজটি বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন। যে কারণে জাহাঙ্গীর আলম শর্ত সাপেক্ষে আওয়ামী লীগের ক্ষমা পেলেও মেয়র পদে আর ফিরতে পারবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে।
স্বাভাবিকভাবে পরবর্তি ২৫ মের নির্বাচনে কিরণ প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন। এ বিষয়ে একজন সিনিয়র নারী সাংবাদিকের মন্তব্য এখানে উল্লেখ করা যায়। তিনি একটি প্রাইভেট টেলিভিশনে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে নিয়মিত টক-শো পরিচালনা করেন। একই সঙ্গে দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে কাজ করে বিশেষজ্ঞ হিসেবে সমাদৃত। তার ভাষ্য, ‘কিরণ সাহেবের সাথে একদিনই কথা বলে মনে হয়েছে, আসাদুর রহমান কিরণ একজন মেয়রের যোগ্য, সিটি করপোরেশন চালানোর মতো যোগ্যতা রয়েছে তাঁর। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় থাকবেন এটাই স্বাভাবিক।
গাজীপুর মহানগর শিল্পকারখানা অধ্যুষিত এলাকা। দেশ বিদেশের বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠির কারখানা গাজীপুর মহানগর এলাকায় রয়েছে। গাজীপুর সিটিতে কেমন মেয়র হওয়া উচিত এ ব্যাপারে
ব্যবসায়ীদেরও চাওয়া পাওয়া বিষয় আছে। একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাদের একটাই চাওয়া ব্যবসা পরিচালনার জন্য ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ, সহজ ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে যেন জটিলতা না থাকে। কিন্তু তাদের
অভিযোগ ২০১৮ সালের পর এসব নিয়ে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে তাদের অনেক দেন দরবার করতে হয়েছে। পরবর্তি সময়ে এফবিসিসিআই এর হস্তক্ষেপে বিষয়টি সুরাহা হয়। তারা এটাও স্বীকার করেছেন, আসাদুর রহমান কিরণ ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব বিষয় নিয়ে কোন প্রকার ঝামেলা হয়নি। ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন এবং সহজ শর্তে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের কথা একটাই গাজীপুরের মেয়রকে হতে হবে ব্যবসা বান্ধব। সরাসরি মতামত না দিলেও তাদের কথা বার্তায় বুঝা যায় আসাদুর রহমান কিরণের মত একজন মেয়র তাদের প্রত্যাশা। তবে এ বিষয়ে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, দলের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের উপরই আমরা আস্থাশীল। তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর পূর্ণ আস্থা আছে তিনি যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিবেন।