বরিশালের বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ'র অনার্স শাখার (ননএমপিও) ১৩ মাসের বেতন বকেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বঞ্চিত শিক্ষকরা। এ সময় কলেজের প্রশাসনিক ভবন ও মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাখার পাশাপাশি রুমে তালা ঝুলিয়ে অধ্যক্ষকেও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এসএম খলিলুর রহমানকে তার অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে অবরুদ্ধ করেন অনার্স শাখার শিক্ষকেরা। এমনকি তাদের ১৩ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করা পর্যন্ত স্থায়ী অবস্থান কর্মসূচীর ঘোষণা দেন অনার্স শিক্ষকেরা। তবে দুপুর ২ টার দিকে গর্ভনিং বডির সদস্য মোস্তফা কামাল চিশতী ও মাসুদ করিম লাভু ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষকদের নিয়ে বসে সমাধানের আশ্বাস দিলে কর্মসূচি তুলে নেয় আন্দোলনরত ১০জন নন এমপিও শিক্ষকরা। আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অনার্স শাখার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ননএমপিও প্রভাষক মোঃ মোকলেছুর রহমান জানান,আমাদের ১৩ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এমত অবস্থায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি বলেন বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অনার্স কোর্সে পাচটি বিষয়ে পাঠদান করা হয়। এর মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে ১৪০ জন শিক্ষার্থী,সমাজ কল্যাণ বিষয়ে ১১০ জন শিক্ষার্থী,হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে ১৯০ জন শিক্ষার্থী ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ১৯০ জন এবং ইতিহাস বিষয়ে ২৩ জন ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী পাঠদান করেন। এসব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বছরে ভর্তি ফি, ফরম ফিলাপ, কেন্দ্র ফি, প্রবেশপত্র ফিসহ আনুষঙ্গিক ফি বাবদ প্রতিষ্ঠান বছরে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু অনার্স কোর্সের জন্য ননএমপিওভুক্ত নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকরে বেতন পরিশোধ করেন না। অথচ অনার্সের ৫ টি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের থেকে পাওয়া আয় থেকে এমপিও শিক্ষকরা টাকা নিচ্ছে। যেটা সম্পূর্ন নিয়মবহির্ভূত। আর আমরা নন এমপিও শিক্ষকরা ২- ৫ হাজার টাকা যাতায়াত খরচ বাবদ নিয়ে থাকি প্রতিষ্ঠান থেকে। এসব বিষয়ে একাধিকবার কলেজের ভারপ্রপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ খলিলুর রহমানকে অবহৃত করলে তিনি বিষয়টির কোন সুরাহা করেনি।নিয়ম হচ্ছে কলেজের আয় থেকে আমাদের বেতন পরিষোধ করবে কর্তৃপক্ষ। অথচ আমাদের বেতন না দিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সম্মানীর নামে ৭ লাখ টাকার দূর্নীতি করা হয়েছে। আমরা ঈদের আগে আমাদের পাওনা বুঝে চাই। তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানের গর্ভানিং বডির সদস্যরা বুধবার সকাল ১০ টায় আমাদের নিয়ে বসে সমাধান করার আশ্বাস দেওয়ায় কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। বাবুগঞ্জ ডিগ্রিকলেজের অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) এসএম খলিলুর রহমান বলেন, আন্দোলনকারী নন এমপিও শিক্ষকদের কোন বেতন বকেয়া নেই। তারা পাঠদান বাবদ প্রতিক্লাসে ১০০ টাকা করে পেয়ে থাকে। সেখানে হয়তো কিছু দাবী দাওয়া থাকতে পারে। তাদের দাবী থাকলে আলোচনায় বসতে পারে। কিন্তু তারা কোন কিছু না বলেই আমাকে অবরুদ্ধ করে এবং প্রতিষ্ঠানের একাধিক কক্ষ তালাবদ্ধ করে রেখে প্রতিষ্ঠানের শুনাম ক্ষুন্ন করেছেন। এমনকি আন্দোলনরত শিক্ষকরা আমার রুমের চেয়ার ছুরে ফেলে দিয়েছেন যাহা সিসি ক্যমেরায় রেকর্ড আছে।গর্ভনিং বডির শিক্ষানুরাগী সদস্য মোস্তফা কামাল চিশতি বলেন, আমাকে অধ্যক্ষ স্যার ফোন দিয়ে আন্দোলনের কথা জানায়। আমি ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের সাথে নিয়ে অধ্যক্ষের রুমের তালা খুলে আলোচনায় বসি। আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার সকাল ১১ টায় কলেজ প্রশাসন, ম্যানেজিং কমিটি ও আন্দোলনকারীদের নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে।