খুলনার পাইকগাছায় রাড়-লী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে দাবিকৃত ঘুষের টাকা না দেওয়ায় পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে মারপিট, মিথ্যা মামলায় জেল-হাজতে প্রেরণ, চুরিসহ ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার শিকার উপজেলার কাটিপাড়া গ্রামের মৃত সোবহান মোড়লের ছেলে আলী আজগর মোড়ল বাদী হয়ে গত ১২ এপ্রিল এসআই মো. ইমরান হোসেনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ঐ মামলা করেন। যার নম্বর সিআর-৪২৬/২৩। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই খুলনাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বিবরণে জানানো হয় যে, উপজেলার কাটিপাড়া গ্রামের আলী আজগর মোড়লসহ অন্যান্যরা কাটিপাড়া মৌজায় কিছু জমি বন্দোবস্ত (ডিসিআর) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছেন। যেখানে হলুদসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করছেন তারা। তবে একই এলাকার গোপাল ভট্টাচার্যের দুই ছেলে সুব্রত ও দেব্রত স্থানীয় রাড়-লী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. ইমরান হোসনের পরোক্ষ সহযোগীতায় ও বহিরাগতদের সম্পৃক্ততায় সেখানকার হলুদ উঠিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে বন্দোবস্ত গ্রহীতা আলী আজগর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ইমরান হোসনের শরণাপন্ন হন। এসআই ইমরান হোসেন আলী আজগরের পক্ষে কাজ করতে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। তবে আজগর ঐ টাকা দিতে অস্বীকার করায় ইমরান তাকে নানাবিধ ভয়-ভীতি দেখান। যার কথোপকথন সু-কৌঁশলে আজগর তার নিজ মোবাইল ফোনে রেকর্ড করেন। পরে ফোন রেকর্ডের বিষয়টি জানতে পেরে ইমরান তার উপর আরো ক্ষীপ্ত হয়ে পড়েন। যার একপর্যায়ে এসআই ইমরান প্রতিপক্ষ সুব্রত-দেব্রত গংদের ইন্ধন দিয়ে গত ২৬ মার্চ আজগরের আবাদি হলুদ তুলতে পাঠান। এ সময় আজগর স্থানীয়দের সহযোগীতায় একজনকে আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নেন। তবে অভিযুক্ত এসআই হলুদ উত্তোলনকারীকে ছেড়ে দিয়ে উল্টো অভিযোগকারী আজগরকে আটকে রেখে মারপিট করেন। এ সময় আজগরের কাছে থাকা এসআই’র কথোপকথনের রেকর্ডকৃত মোবাইল ফোন, হাতে থাকা আংটিসহ নগদ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে থানার মাধ্যমে আদালতে পাঠায়। এতে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল-হাজতে পাঠায়। এদিকে আলী আজগর জেলে থাকার সুযোগে এসআই ইমরানের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় প্রতিপক্ষরা ক্ষেতের সমুদয় হলুদ তুলে নিয়ে যায়। ঘটনার এক সপ্তাহ পর আলী আজগর জামিনে ছাড়া পেয়ে ইমরানের কাছে মোবাইলসহ অন্যান্য মালামাল ফেরৎ চান। এতে তিনি তার উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মামলায় হয়রানীসহ নানাবিধ ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে উপায়ন্ত না পেয়ে আলী আজগর বাদী হয়ে গত ১২ এপ্রিল এসআই ইমরানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ঐ মামলা দায়ের করেন। এ ব্যাপারে মামলার বাদীর পক্ষের আইনজীবী এফএম রাজ্জাক জানান, বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআই খুলনা কে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।